ছোটবেলায় আমাদের অনেকেরই ধারণা ছিল কোন ফলের বীজ খেয়ে ফেললে তা পেটে গিয়ে গাছ হয়ে যাবে। তাই ফল খাওয়ার সময় খুব সন্তর্পনে আমরা সেগুলো আলাদা করে ফেলে দিতাম। বড় হওয়ার পরও ফলের বিচি বা বীজ নিয়ে অমূলক একটা ভয় রয়েই গেছে।
অনেকেরই ধারণা এসব বীজ পেটে গেলে আর কিছু না হােক পেটের রোগ হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। গ্রীষ্মকালের রসালো ফল তরমুজের বীজও এই ধারণার বাইরে নয়। তাই তরমুজ খাওয়ার সময় আমরা খুব কায়দা করে মুখের ভেতরেই তরমুজের ছোট ছোট বীজগুলোকে আলাদা করে বাইরে ছুঁড়ে ফেলি।
কিন্তু অবাক করা হলেও সত্যি ফেলে না দিয়ে আমাদের বরং তরমুজের বিচি বেশি করে খাওয়া উচিত। কেননা তরমুজের মতই তরমুজের বিচিরও হয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
তবে তরমুজ থেকে সরাসরি না খেয়ে বিচিগুলো শুকিয়ে খোসা ছাড়িয়ে খেলে তা আরও বেশি পুষ্টির যোগান দেয় বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিশেষজ্ঞরা। খোসা ছাড়িয়ে নিলে এর থেকে অনেক ক্ষতিকর জিনিস বের হয়ে যায়, আর প্রোটিনে ভরপুর হয়ে উঠে। এরকম মাত্র ১ আউন্স তরমুজ বীজ প্রায় ১০ গ্রাম প্রোটিনের যোগান দেয়।
তরমুজের ক্ষেত্রে এর বীজের উপরের কালো খোসা ছাড়িয়ে ভেতরের সাদা অংশ বের করা হয়। এতে বিচিগুলো জীবাণুমুক্ত হয়, পুষ্টিগুণ বাড়ে আর হজমে সহজ হয়। এই বিচিগুলোতে প্রোটিন, ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম আর উপকারী ফ্যাট থাকে যা কোলেস্টেরল কমায় আর হার্টের অসুখ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে।
তবে সরাসরিও তরমুজের বিচি খাওয়া যায়। আর সেটা খেতেও অনেকটা তরমুজের মতই। তরমুজের বিচির স্বাদ অনেকটা সূর্যমুখীর বিচির মতই, তবে অনেকটাই কুড়মুড়ে আর পুরু। সালাদের সঙ্গেও খেতে সুস্বাদু তরমুজের বীজ।
মূলত যে কোনো বীজই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, কিন্তু তরমুজের বীজ একটু বেশিই উপকারী।