এককোষী জীব অ্যামিবা সম্পর্কে আমরা অল্পস্বল্প একটু জানি। তবে আমরা কি জানি এই একটি কোষের মাধ্যমেই অ্যামিবা তাঁর সকল জৈবিক কার্যকলাপ সম্পন্ন করে থাকে ? সবেচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, অ্যামিবার দেহ থেকে আঙুলের মত ক্ষণপদ সৃষ্টি হয় যা অ্যামিবার চলাচলে সাহায্য করে।
ক্ষণপদের ইংরেজি অর্থ হচ্ছে Pseudopodia। Pseudopodia শব্দের অর্থ হল নকল বা মেকি পা। চলনের সময় অ্যামিবা প্রয়োজনমত দেহের বিভিন্ন অংশ থেকে ক্ষণপদ সৃষ্টি করে এবং পুনরায় অ্যামিবার দেহের মধ্যে বিলীন হয়ে যায়। মূলত ক্ষণপদ অ্যামিবার সম্মুখ দিক নির্দেশ করে। এছাড়া, খাদ্য গ্রহণেও সহায়তা করে অ্যামিবার ক্ষণপদ।
চলনের সময় অ্যামিবার দেহের যে কোন অংশ থেকে ক্ষণপদ বের হয়। ক্ষণপদ সৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে অ্যামিবার দেহের প্রোটোপ্লাজম ক্ষণপদের দিকে প্রবাহিত হয় এবং সেই সাথে দেহের অন্যান্য অংশও সেদিকে সরে যায়। এভাবে, আস্তে আস্তে অ্যামিবা তাঁর লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। একই সাথে দেহের বিভিন্ন অংশে অনেকগুলো ক্ষণপদ সৃষ্টি হতে পারে। এই কারণে অ্যামিবা একসময়ে যেদিকে চলতে পারে ঠিক পরমুহূর্তে অন্যদিকেও চলতে পারে। মজার ব্যাপার হচ্ছে, দেহের একপাশে নতুন ক্ষণপদ সৃষ্টি হলে পুরাতন ক্ষণপদগুলো দেহের ভিতরে বিলীন হয়ে যায়। এভাবেই অ্যামিবা গড়িয়ে গড়িয়ে চলতে থাকে। অ্যামিবার এই বিশেষ ধরণের চলনের নাম অ্যামিবয়েড চলন।
খাদ্যগ্রহণ, আত্মরক্ষা, অনুকূল পরিবেশের সন্ধানে প্রাণী একস্থান থেকে অন্যস্থানে গমন করে। প্রাণীর এই রূপ গমন চলন বা Locomotion নামে পরিচিত।