চীনের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে কুয়াশাঘন আর বৃষ্টিস্নাত পাহাড়ে বাঁশগাছের ঘন জঙ্গলে বাস করে পৃথিবীর এক দুর্লভ স্তন্যপায়ী প্রাণী। সাদা আর কালো রঙের পশমে ঢাকা এই প্রাণীটি হচ্ছে পাণ্ডা। ভল্লুকের আত্মীয় এই পাণ্ডা বন্য পরিবেশে অবশিষ্ট আছে আর মাত্র ১ হাজারের মত।
পাণ্ডারা সাধারণত বাঁশের কচি ডগা আর পাতা ছাড়া তেমন কিছুই খায় না। মাঝে মাঝে অবশ্য তারা অন্যান্য শাকসবজি, মাছ আর ছোট প্রাণী খেয়ে থাকে, তবে তার পরিমাণ খুবই কম। পাণ্ডাদের খাদ্যগ্রহণের ৯৯% শতাংশই বাঁশ। পাণ্ডারা খুব দ্রুত খায় আর খেতেও পারে প্রচুর।
খাওয়াটা তাদের কাছে খুব আনন্দদায়ক কাজ। তাই দিনের অর্ধেকটা সময় তারা খেয়েই কাটিয়ে দেয়। পাণ্ডারা তাদের খাবারের মাত্র এক-পঞ্চমাংশ হজম করতে পারে। এমনিতেই বাঁশ তেমন একটা পুষ্টিকর খাবার নয়।
তাই স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য তাদের প্রচুর খেতে হয়। ১২ ঘণ্টায় পাণ্ডাদেরকে তাদের দেহের ওজনের কমপক্ষে ১৫ শতাংশ ওজনের খাবার গ্রহণ করতে হয়। তাই তারা খায়ও দ্রুত।
পাণ্ডার দাঁতগুলো অনেক চওড়া হয়। দাঁতের এরকম গঠনের কারণে পাণ্ডারা বাঁশের ডগা, পাতা আর কাণ্ড সহজেই চিবিয়ে খেতে পারে। খাওয়ার সময় এরা সামনের দুই হাত দিয়ে শক্ত করে বাঁশগাছের কাণ্ড ধরে এরপর বাঁশ খায়।
কোন একটি জায়গায় পাণ্ডাদের বাঁচতে হলে কমপক্ষে দুটি প্রজাতির বাঁশগাছ সেখানে থাকতে হবে, নইলে পাণ্ডারা না খেতে পেয়ে মারা যাবে।
পাণ্ডা খুব লাজুক প্রকৃতির একটি প্রাণী। তাই তারা মানুষের আবাসস্থলের বেশি কাছে আসে না। এ কারণে পাণ্ডার বসবাস খুব সীমিত জায়গার মধ্যে হয়ে থাকে।
সূত্র : ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক অবলম্বনে