পৃথিবীতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে মানুষ। কিন্তু সেই হারে পানযোগ্য পানির উৎসের সংখ্যা দিন দিন কমেই যাচ্ছে। তাই নতুন একটি পানযোগ্য পানির উৎস পৃথিবীর মানুষের জীবন ধারণের জন্য অপরিহার্য। সমুদ্রের পানি পরিশোধিত করে পানের উপযোগী করে তোলার এক যন্ত্র আবিষ্কার করেছে একটি প্রতিষ্ঠান।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ১.২ বিলিয়ন মানুষ এমন জায়গায় বসবাস করে যেখানে পানির অভাব রয়েছে। যদিও পানি থাকে অনেকসময়ই দেখা যায় তা খাওয়া বা ব্যবহারের উপযোগী নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১.৮ বিলিয়ন মানুষ প্রতিদিন দূষিত পানি পান করে।
প্রতিষ্ঠানটি যে যন্ত্র তৈরি করেছে তা সূর্যশক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমুদ্রের পানিকে বিশুদ্ধ করে তুলবে। ডিসলিনেটর নামক এই যন্ত্র সমুদ্রের পানি থেকে কম মূল্যে লবণ দূর করবে। তবে শুধু সমুদ্রের পানিই নয়, যেকোনো জায়গার পানিকেই বিশুদ্ধ করে সম্পূর্ণ খাওয়ার উপযোগী করে তুলতে সক্ষম এই ডিসলিনেটর।
যন্ত্রটি দেখতে একটি ফ্ল্যাট-স্ক্রিন টিভির মত। প্রতিষ্ঠানটি বলছে একদিনে প্রায় ১৫ লিটার পানি বিশুদ্ধ করতে পারবে এই যন্ত্র। ডিসলিনেটর একটি বাসায় স্থাপন করতে ৮০০ ডলারেরও কম খরচ হবে।
ডিসলিনেটর সূর্যশক্তিকে বিদ্যুৎশক্তিতে রূপান্তরিত করে। ফলে যন্ত্রটি অত্যন্ত গরম হয়ে যায় যার কারণে এর ভেতরকার পানি বাষ্পে পরিণত হয়। এই বাষ্প আবার যন্ত্রের ভেতরেই শীতল করে বিশুদ্ধ পানি উৎপন্ন করা হয়।
শুধু সমুদ্রের পানিই নয়, নদী বা অন্য কোন উৎসের দূষিত পানিকেও বিশুদ্ধ করতে পারবে ডিসলিনেটর। পৃথিবীর অনেক জায়গাতেই মাটির নিচ থেকে যে পানির তলা হয় তাতে আর্সেনিকসহ বিভিন্ন ভারী খনিজ পদার্থ মিশ্রিত থাকে। পরিশোধনের মাধ্যমে এগুলো দূর করা যায় না কিন্তু ডিসলিনেটর দ্বারা এগুলো বিশুদ্ধ করা সম্ভব।
ডিসলিনেটর কোম্পানির নির্মাতা এবং সিইও উইলিয়াম জানসেন বলেন, ‘এই যন্ত্র অনেক মানুষ জীবন বদলে দেবে। পৃথিবীর বহু মানুষ আছে যারা জীবনধারণের জন্য পর্যাপ্ত পানি পায় না। তারা অল্প খরচে এই যন্ত্রটি বাসায় লাগিয়ে নিলেই তাদের দৈনন্দিন পানির চাহিদা মেটাতে পারবে।
তবে ডিসলিনেটর এখনও বাজারে আসতে কিছুটা সময় লাগবে। জানসেন জানান, ভারতের তামিল নাড়ুতে এখন ডিসলিনেটর নিয়ে পরীক্ষা চলছে।