নেকড়ে সাধারণত একটি আক্রমণাত্মক ও শিকারি প্রাণী যা জঙ্গলে বা পাহাড়ে-পর্বতে দেখা যায়। তবে উপকূলীয় নেকড়ে বা সামুদ্রিক নেকড়ে এর অনেকটাই ব্যতিক্রম। এরা সমুদ্রের আশেপাশে বাস করে আর এদের জীবিকার অনেককিছুই সমুদ্রের উপর নির্ভর করে।
কানাডার ভ্যাঙ্কুভার দ্বীপের উপকূল ঘেঁষে এরা ভূতের মত ঘুরে বেড়ায়। খুব কম মানুষের চোখেই তাই এরা ধরা পড়েছে। রেইনকোস্ট কনজারভেশন ফাউন্ডেশনের পরিচালক ক্রিস ড্যারিমন্ট প্রায় ২ দশক ধরে এই মাংসাশী প্রাণীটির জীবনযাত্রা নিয়ে গবেষণা করেছেন।
উপকূলীয় নেকড়ে দুই প্রজাতির। মূলভূমির উপকূলীয় নেকড়ে এবং দ্বীপ উপকূলীয় নেকড়ে। মূলভূমিতে বসবাস করা নেকড়ে দ্বীপেরগুলোর চাইতে কম সামুদ্রিক খাবার খায়।
উপকূলীয় নেকড়ে সমুদ্র ও সামুদ্রিক খাবারের উপর নির্ভর করে থাকে। এদের জিন বিশ্লেষণ করেও এই প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। নেকড়েরা মাইলের পর মাইল বিচরণ করে থাকে যেখানে অনেক জলাশয় অতিক্রম করতে হয় তাদের। এখান থেকেই তাদের এ ধরণের বৈশিষ্ট্য আসতে পারে বলে গবেষকেরা মনে করছেন।
নেকড়ে সাধারণত হরিণ বা এজাতীয় প্রাণী ভক্ষন করে থাকলেও উপকূলীয় নেকড়ের খাবার তালিকার বেশিভাগটাতেই থাকে স্যালমন মাছ। এছাড়াও ঝিনুক, মাছের ডিম, সিল, ভোঁদড় আর মৃত তিমি খেয়ে থাকে এরা। আর যেহেতু সামুদ্রিক খাবার খেতে হয় তাই এই নেকড়েদেরকে সাঁতারও কাটতে হয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে উপকূলীয় নেকড়েরা খুব দক্ষ সাঁতারু। খাবারের সন্ধানে এরা সমুদ্রের অনেক দূরে আর গভীরে যেতে পারে। এমনকি ডাঙা থেকে ১২ কিলোমিটার সমুদ্রের ভেতরেও এদের দেখা পাওয়া গিয়েছে।
অন্যান্য ধূসর নেকড়ের চাইতে আকারে ২০ শতাংশ ছোট হয়ে থাকে উপকূলীয় নেকড়ে। বড়জোর একটা জার্মান শেপার্ডের সমান হয় এরা। ধূসর ছাড়াও লালচে বাদামী রঙ দেখা যায় এদের।