অটো লিলিয়েন্থাল প্রথম ব্যক্তি যিনি কিনা মানুষ হয়েও পাখির মতো আকাশে উড়েছিলেন। তিনিই সর্বপ্রথম সফলভাবে একটি গ্লাইডার উড়াতে সক্ষম হন। গ্লাইডার হচ্ছে প্রশস্ত পাখাওয়ালা কিন্তু ইঞ্জিনবিহীন উড়বার একটি যান।
পাহাড় বা উঁচু কোন স্থান থেকে এ গ্লাইডার নিয়ে লাফ দিয়ে ভেসে ভেসে মাটিতে নামা যায় যা অনেকটা উড়বার অনুভূতি দেয়।
আগামী ২০১৬ সালে লিলিয়েন্থালের আকাশে উড়ার ১২৫ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষ্যে উত্তরপূর্ব জার্মানিতে অবস্থিত অটো লিলিয়েন্থাল জাদুঘর ইতোমধ্যেই তার কিছু ঐতিহাসিক ছবি ইন্টারনেটে প্রকাশ করেছে।
শুধু ছবিই নয়, লিলিয়েন্থালের আঁকা ছবি, চিঠি, পেটেন্ট এসবও প্রকাশ করেছে আঙ্কলামে অবস্থিত এ জাদুঘরটি।
১৮৪৮ সালে বাল্টিক সাগরের তীরে জার্মানির আঙ্কলামে জন্ম হয় লিলিয়েন্থালের। ছোটবেলা থেকেই তিনি এবং তার ভাই গুস্তাভ উড়বার বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে গবেষণা করতন। অবশেষে অনেক পরে, ১৮৯১ সালে আসে প্রথম সাফল্য।
১৮৯১ সালে প্রথম মানুষ হিসেবে গ্লাইডারে করে উড়ে বেড়ান লিলিয়েন্থাল। প্রথমবার ২৫ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। এরপর সারা জীবনে প্রায় ১ হাজার বারেরও বেশি সময় গ্লাইডারে উড়েছেন তিনি। ধীরে ধীরে তার গ্লাইডারও আরও উন্নত হয়। সর্বোচ্চ ৮০ মিটার পথ তিনি অতিক্রম করেছিলেন গ্লাইডার দিয়ে।
একটি যথাযথ সুবিধাজনক পাহাড় গ্লাইডারে উড়বার পূর্বশর্ত। কিন্তু পছন্দমত পাহাড় না পেয়ে ১৮৯৪ সালে লিলিয়েন্থাল নিজেই একটি পাহাড় বানিয়ে নেন। বার্লিনের একটি পরিত্যক্ত ইটভাটায় তার নির্মিত পাহাড়টি তার বহুবার আকাশে উড়ার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে আজো।
১৮৯৪ সালে লিলিয়েন্থাল বাণিজ্যিকভাবে তার গ্লাইডার বিক্রি করতে শুরু করেন। সে সময় একটি গ্লাইডারের দাম পড়তো ৫০০ মার্ক (বর্তমান সময়ের ৭ হাজার ডলারের সমান)।
১৮৯৬ সালের ৯ আগস্ট গ্লাইডারে উড়ার সময় মাটিতে পড়ে মৃত্যুবরণ করেন অটো লিলিয়েন্থাল। উত্তরপূর্ব জার্মানির হ্যাভলল্যান্ডে গলেনবার্গ পর্বত থেকে উড়ার পরে মাটিতে পড়ে তিনি আহত হন। সেদিনই বার্লিনের ইউনিভার্সিটি ক্লিনিকে তিনি মারা যান।