ক্রিকেট অঙ্গনের একটি কুসংস্কার

ক্রিকেটের খুব মজার একটি অংশ এই নেলসন নাম্বার। ১১১, ২২২, ৩৩৩ এই সংখ্যাগুলো নেলসন, ডাবল নেলসন, ট্রিপল নেলসন নামে পরিচিত। Viscount Nelson নামক একজন ভাইস এডমিরালের এক চোখ, এক হাত এবং এক পা না থাকায় ইংরেজরা কুসংস্কার হিসেবেই দেখে এই নাম্বারগুলোকে। যদিও বলা হয়ে থাকে এডমিরাল নেলসনের দুই পা-ই ছিলো কিন্তু কুসংস্কারের তোপে তাকে এক পা-হীন বলা হয়। 

আম্পায়ার ডেভিড শেপার্ডের কথা মনে আছে ??  ২০০৯ সালে মারা যাবার আগে ২০০৭ সালে ক্রিকেট আম্পায়ারিং থেকে অবসর নেন তিনি। অবসর নেয়ার আগে তিনি একমাত্র আম্পায়ার হিসেবে সব টেস্ট খেলুড়ে দেশের খেলায় আম্পায়ারিং করার রেকর্ড করেন।  আম্পায়ারিং এর পাশাপাশি এই নেলসন নাম্বারের কুসংস্কারে বিশ্বাসের জন্যে তিনি বিখ্যাত ছিলেন। খেলার মাঝখানে স্কোর যখন ১১১, ২২২ কিংবা ৩৩৩ হতো, তখন তিনি এক পা উঠিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। কখনো কখনো নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে ছোটো করে লাফাতেন। তার খেলোয়াড় হিসেবে ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তিনি এ কুসংস্কারে বিশ্বাস করে আসতেন। মূলত ব্যাটসম্যানের জন্যে বিপদজনক হিসেবে বিখ্যাত এই কুসংস্কারটি। দুই প্রান্তে তিনটি করে একই রকম স্ট্যাম্প থাকার কারণে একইরকম ৩টি সংখ্যা পরপর থাকলে তা ব্যাটসম্যানদের জন্যে বিপদজনক হিসেবে ধরা হয়।  

শুধু ১১১ রানই নয়, ১ উইকেটে ১১১ (১১১/১), কিংবা ২ উইকেটে ২২২ (২২২/২) এগুলোও মাল্টিপল নেলসন নাম্বার হিসেবে পরিচিত।

কথিত আছে, ১৮৭৪ সাল থেকে ১৮৯১ সাল পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডে একটি ক্রিকেট ক্লাব ছিলো, যার নাম ছিলো “নেলসন”। এ ক্লাবটি তাদের প্রথম ম্যাচে ১১১ রানে অলআউট হয়।  আবার তাদের শেষ ম্যাচেও ১১১ রানে অলআউট হয়। দুটি ম্যাচের কোনোটিতেই তারা জিততে পারে নি। এটি কাকতালীয় হলেও, এরপর থেকে অনেকেই নেলসন নাম্বারের কুসংস্কারে ভালোভাবে বিশ্বাস করা শুরু করে।

নেলসন নাম্বারের আরেকটি কাকতালীয় ঘটনা হলো, ২০১১ সালের ১১ নভেম্বর (১১/১১/১১) তারিখে দক্ষিন আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার প্রথম টেস্ট চলাকালীন সময়ে ৩য়দিন সকাল ১১টা ১১ মিনিটে দক্ষিন আফ্রিকার জয়ের জন্যে ১১১ রান প্রয়োজন ছিলো। তখন আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড সহ মাঠের অধিকাংশ দর্শক এক পা তুলে দাঁড়িয়ে থাকে। সে ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া ৮ উইকেটে হেরে যায়।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন