ক্রুইফ টার্নঃ ফুটবলের দৃষ্টিনন্দন ড্রিবলিং

চিরকাল স্মৃতিতে গেঁথে থাকা হিরণ্ময় একটি মুহূর্ত। ডাচ জাদুকর ইয়োহান ক্রুইফের পায়ে জন্ম নেওয়া স্মরণীয় মুহূর্তটি হয়ে থাকছে ‘টোটাল ফুটবল’-এর স্মারক।

১৯৭৪ বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের সেই ম্যাচটি ছিল সুইডেনের বিপক্ষে। অ্যাটাকিং জোনে লম্বা এক পাসে বল উড়ে এলো ক্রুইফের কাছে। তাঁর গায়ে গা লাগানো সুইডেনের ডিফেন্ডার ইয়ান ওলসন। বলটি রিসিভ করে ক্রুইফ ভান করলেন ডান পায়ে ক্রস করার। ডিফেন্ডার সেদিক দিয়ে বল প্রতিহত করতে গিয়ে হতবাক হয়ে আবিষ্কার করলেন, বল তাঁর পেছনে। কিভাবে? ক্রস করার ভান করে বলটি ক্রুইফ টেনে নিলেন পেছনে, পুরো ১৮০ ডিগ্রি শরীর ঘুরিয়ে যে টার্ন করলেন, তাতেই তৈরি হলো রূপকথার মতো এক ফুটবল মুহূর্তের। ‘ক্রুইফ টার্ন’ কথাটিই তো এরপর চালু হয়ে গেল ফুটবলে। বল পায়ে এমন এক টার্ন ক্রুইফ আবিষ্কার করেছিলেন, যাতে ডিফেন্ডার কিছু বুঝে ওঠার আগেই পেছনে পড়ে যেতো।

আজো টোটাল ফুটবল কথাটি শুনলে একজন মানুষের নাম বেশি করে উচ্চারিত হয় তিনি ইয়োহান ক্রুইফ। বিশ্বকাপ না জেতা খেলোয়াড়দের তালিকা করলে সবার আগে চলে আসবে এ খেলোয়াড়ের নাম ! ফুটবল খেলায় ক্রুইফের টার্ন কেড়ে নিয়েছিল বিশ্বজোড়া দর্শকদের মন। এছাড়া, ক্রুইফের গতি, দক্ষতা ও ড্রিবলিং প্রতিপক্ষের জন্য এক ভয়ংকর ফুটবলারে পরিণত করে তাঁকে। জ্যামিতিক রেখার মতো জটিল সব কৌণিক পাস দিতে পারতেন ক্রুইফ।  

পৃথিবীতে অনেক রকমের খেলাই আছে। কিন্তু ফুটবল খেলার মত শৈল্পিক খেলা দ্বিতীয়টি নেই। ফুটবল মাঠে বল নিয়ে ক্যারিকেচার করার একমাত্র উপায় দৃষ্টিনন্দন ড্রিবলিং। বিভিন্ন কৌশলে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে বল বের করে নিয়ে যাওয়াই ড্রিবলিং। আর ড্রিবলিং এর একটি শৈল্পিক প্রয়োগ হচ্ছে ক্রুইফ টার্ন।

 

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন