সম্প্রতি চীনের একটি কেমিক্যালের গুদামে বিস্ফোরণের ফলে আশংকাজনক অবস্থায় রয়েছেন ওই শহরটির বাসিন্দারা। ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান পানি এবং বাতাসের সাথে মিশে মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের সম্ভাবনা তৈরি করছে।
চীনের তিয়ানজিনে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই ভয়াবহ বিস্ফোরণে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে রাসায়নিক দ্রব্যের একটি গুদাম। বেশ কয়েকটি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। বিস্ফােরণের ফলে সৃষ্ট ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মারা গেছে ১১০ জনের বেশি মানুষ। আর এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় ১০০ জন।
ধ্বংসস্তূপের মধ্যে এখনো উদ্ধারকাজ চলছে। কিন্তু ধ্বংসস্তূপ থেকে উদগীরিত ধোঁয়া আর পানিতে ছড়িয়ে পড়া বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বন্দর নগরীর জন্য।
তবে ঠিক কী পরিমাণ কোন কোন ধরণের রাসায়নিক পদার্থ এখানে ছিল তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। ‘বেইজিং নিউজ’ পত্রিকা বলছে এখানে প্রায় ১০০ টন সোডিয়াম সায়ানাইড ছিল যদিও ২৪ টনের বেশি রাখার নিয়ম নেই। এছাড়াও অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট, পটাশিয়াম নাইট্রেট আর ক্যালসিয়াম কার্বাইডও ছিল বলে জানা গিয়েছে।
Greenpeace Research Laboratories-এর গবেষক ডেভিড সান্তিও বলেন, ‘ছড়িয়ে পড়া এই সোডিয়াম সায়ানাইড পরিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি বহন করছে। কেননা এটি মারাত্মক বিষাক্ত।
কোনোভাবে এই পদার্থ নিকটস্থ নদী বা খাবার পানির উৎসের সাথে মিশে গেলে তা মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীর জীবননাশের কারণ হয়ে দাঁড়াবে’। সোডিয়াম সায়ানাইড অনেকদিন পর্যন্ত পানিতে মিশে থাকে। মাছ এবং এই পানির সংস্পর্শে আসা মাটিতে থাকা প্রাণী সবাই আক্রান্ত হবে এর দ্বারা। মূলত প্রাণীর শ্বাসকার্যে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করে সোডিয়াম সায়ানাইড।
শুধু পানি নয়। সোডিয়াম সায়ানাইডের ধোঁয়াও প্রচণ্ড বিষাক্ত এবং সমান ক্ষতিকর। আগুনের কারণে এটি হাইড্রোজেন সায়ানাইড গ্যাসে পরিণত হয় যা বিষাক্ত ধোঁয়া সৃষ্টি করে।
ইতিমধ্যে কর্তৃপক্ষ বিস্ফোরণস্থলের ৩ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে থাকা সবাইকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে।