যদিও প্রাচীন কল্পকথা বলে এরা নাকি মানুষের বাচ্চা খেয় ফেলে, তবে তা না হলেও দাড়িওয়ালা শকুনের নিতান্তই গোবেচারা নয়। এরা হাড় খায়, বদরাগী চেহারা, এমনকি এরা নিজেরদের পালকও রং করে। ইংরেজিতে এদের নাম bearded vultures। এরা ল্যামারগায়ার (Lammergeier) নামেও পরিচিত।
তবে সুরুচির উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই শকুন। বন্য পালক, কুঁজের মত পেছন অংশ, পুতির মত চোখ, সাপ আকৃতির ন্যাড়া মাথা এ সবকিছু মিলিয়ে দাড়িওয়ালা শকুন পৃথিবীর স্টাইলিশ পাখিতে পরিণত হয়েছে। অনেকের মতে এই পাখি নিজেদের পালকের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য নাকি প্রসাধনও ব্যবহার করে!
৭ বছর বয়সে দাড়িওয়ালা শকুনেরা কৈশোরে পা দেয় আর তখন থেকেই এদের সৌন্দর্য ফুটে উঠতে থাকে। এরা মাটিতে গর্ত করে শরীরের অর্ধেকটা সেখানে ঢুকিয়ে দেয়। ঠোঁট আর নখ দিয়ে মাথা ঘসতে থাকে আর মাটিতে পালক ঘসতে থাকে। এইভাবে এদের পালক কমলা বা গোলাপি রং ধারণ করে।
এই শকুনের ওজন ৮ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হয়। এদের সম্পর্কে অনেক গা ছমছমে লোককথা প্রচলিত রয়েছে। যেমন: এরা নাকি মানুষের বাচ্চা চুরি করে খেয়ে ফেলে। এই অপপ্রচারের কারণে এরা প্রায় বিলুপ্তই হয়ে যাচ্ছিল।
এই দাড়িওয়ালা শকুন দুটি ডিম পাড়ে, কিন্তু বেড়ে ওঠে একটিই। একটু বড় হওয়ার পরই তুলনামূলক শক্তিশালী বাচ্চাটা অন্যটিকে বাসা থেকে ফেলে দেয়। অন্য যেসব শকুন তাদের বাসার আশেপাশে আসে সেগুলোর সাথেও মারামারি জুড়ে দেয় এরা।
দাড়িওয়ালা শকুনের আরেকটি ভয়ানক অভ্যাস রয়েছে। এদের খাবারের ৭০-৯০ শতাংশই হচ্ছে হাড়। এটা এক দিক থেকে ভালো যে খাবারের জন্য এদেরকে অন্য কোন প্রাণীর সাথে পাল্লা দিতে হয়না। যেটাই এদের খাবার হোক না কেন, এরা প্রাণীটা শুকিয়ে হাড় বের হয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে।