মহাবিশ্ব সম্পর্কে নতুন নতুন আর আশ্চর্যজনক এমন সব তথ্য উদঘাটন হচ্ছে যে একদিন যদি সত্যিই ভিনগ্রহের কোন প্রাণীর সন্ধান পাওয়া যায় তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
আমরা চাঁদে মানুষ পাঠিয়েছি, মঙ্গলে পাঠিয়েছি রোভার। এমনকি আমাদের সৌরজগতের বাইরেও স্যাটেলাইট পাঠিয়ে জানার চেষ্টা করছি নতুন সব তথ্য।
সম্প্রতি বৃহস্পতির চাঁদ জেনিমেডে সন্ধান পাওয়া গিয়েছে লবণাক্ত সমুদ্রের আর শনির চাঁদ টাইটানে সন্ধান পাওয়া গিয়েছে লিকুইড মিথেনের। এসব লক্ষণ দেখে ধারণা করা হচ্ছে, সেদিন আর বেশি দূরে নেই যেদিন আমরা সত্যিকারেই হয়তো পৃথিবীর বাইরে কোন প্রাণের সন্ধান পেয়ে যাবো।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, পৃথিবীর বাইরে যদি আমরা প্রাণের সন্ধান পাই তাহলে এই মহাবিশ্ব এবং আমাদের সম্পর্কে অনেক অজানা তথ্য হয়তো আমরা জানতে পারবো। আমরা জানি পৃথিবীতে অণু, পরমাণু আর শক্তি কীভাবে কাজ করে, প্রাণের ক্ষেত্রে কীভাবে কাজ করে এখানে। কিন্তু পৃথিবীর বাইরে এসব পদার্থ আর রসায়নের সব নিয়মকানুন কি একইভাবে কাজ করে আর তা না করলে কীভাবে কাজ করে এগুলো আমাদের কাছে এখনও রহস্যই রয়ে গিয়েছে।
একটি গ্রহে বসবাসকারী প্রাণীদের কারণে সে গ্রহের গঠন, পরিবেশ, বায়ুমণ্ডল ইত্যাদি অনেক কিছুরই পরিবর্তন ঘটে। বিজ্ঞানীদের ধারণা, অন্য কোন গ্রহের ক্ষেত্রেও এমনটাই ঘটবে।
জীবন গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান অর্থাৎ ডিএনএ গঠনে যা লাগে যেমন- অরগানিক মলিক্যুল, কার্বন, অ্যামিনো এসিড ইত্যাদির সন্ধান পাবার চেষ্টা করছেন তারা। কিন্তু সত্যিই যদি সন্ধান পেয়ে যান তারা তাহলে কী করবেন?
পৃথিবীর বাইরে যদি এমন কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়, তাহলে সতর্কতার সাথে সেটা পৃথিবীতে নিয়ে আসা হবে। এখানে শক্তিশালী মাইক্রোস্কোপ আর যন্ত্রপাতির সাহায্যে ভালোভাবে গবেষণা করা হবে সেগুলো নিয়ে, যেমনটা করা হয়েছিল চাঁদের পাথর নিয়ে। এদের রাসায়নিক গঠন ও উপাদান, এরা কী খায়, কীভাবে বাড়ে বা নড়েচড়ে এসব নিয়ে গবেষণা করা হবে। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে এদের ডিএনএর সাথে আমাদের মিল কতটুকু।
তবে বহিরাগত কোন প্রাণীর কারণে পৃথিবীর প্রাণীদের কোন হুমকির মুখে পড়তে হবে না বলেই বিশ্বাস বেশিরভাগ বিজ্ঞানীদের। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে পৃথিবীতে প্রাণের বিবর্তন ঘটছে। এতো সহজে তাই আমাদের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
তবে পৃথিবীর বাইরে কোন প্রাণী পেলে আমাদের ‘প্রাণ’ নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে। হয়তো নতুন এক অভিযাত্রার সূচনা হবে তখন।