সায়েন্স ফিকশন সিনেমাগুলোর মধ্যে সম্ভবত ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার’ সিনেমার ওপর আর কিছু হয়না। অন্যান্য সায়েন্স ফিকশন সিনেমার মত জটিল সব বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের বদলে এই সিনেমাতে রয়েছে নির্মল বিনোদন আর টানটান উত্তেজনা, সেই সাথে মিষ্টি প্রেম আর হাসি-ঠাট্টার মিশেল।
গেলো অক্টোবরের ২১ তারিখের পর ভবিষ্যতের এই মুভি অফিশিয়ালি অতীতে চলে গেল। কেননা সিনেমায় দেখানো হয়েছিলো মুভির নায়ক আর বিজ্ঞানী তাদের আজব টাইম মেশিন কারের সাহায্যে ভবিষ্যতের ২০১৫ সালের ২১ অক্টোবর তারিখে এসেছিল। আর সে দিনটিই আমরা অতিক্রম করে চলে এসেছি। তবে মুভির জল্পনাকল্পনা মিথ্যে প্রমান করে আমাদের বাবা-মা এখনো একত্রেই আছেন আর আমরাও বহাল তবিয়তেই আছি।
টাইম ট্রাভেল বা সময়ভ্রমণের কাল্পনিক তত্ত্ব নিয়ে নির্মিত হয় ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার’ মুভিটি। এই সিরিজের ৩টি সিনেমা রয়েছে যার প্রথমটি মুক্তি পায় ১৯৮৫ সালে। মুক্তির পরপরই সিনেমাটি দারুণ সাফল্য পায় এবং বক্স অফিসে প্রায় ৩৮০ মিলিয়ন ডলার আয় করে। পরের ২টি পর্ব যথাক্রমে ১৯৮৯ ও ১৯৯০ সালে মুক্তি পায় এবং সেগুলোও ব্যাপক সাড়া ফেলে।
‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার’ সিনেমার নাম শুনলেই আমাদের চোখে ভেসে উঠে এলোমেলো চুলের এক পাগলা বৈজ্ঞানিক আর সাহসী এক তরুণের ছবি। মার্টি ম্যাকফ্লাই নামের এই তরুণ ঘটনাবশত বিজ্ঞানী এমেট ব্রাউনের একটি টাইম ট্র্যাভেলের গাড়িতে চড়ে বসে।
প্লুটোনিয়াম সমৃদ্ধ এই গাড়ি ঘণ্টায় ৮৮ মাইল গতিবেগ স্পর্শ করলেই চলে যায় অন্য সময়ে। নায়ক মার্টি এই গাড়িতে করেই চলে যায় ১৯৫০ সালে। সেখানে সে দেখা পায় তরুণ বয়সে তার বাবা-মাকে যাদের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে তাকে করতে হয় নানারকম সব চেষ্টা। ঘটনাচক্রে আসতে থাকে আরও নতুন নতুন চরিত্র এবং মজার সব কাহিনী।
আকর্ষণীয় গল্প, দুর্দান্ত আবহ সংগীত আর চরিত্রের জন্য অতি দ্রুত এই সিনেমা ক্লাসিক হিসেবে জায়গা করে নেয় এবং মাইকেল জে ফক্স (মার্টি) এবং ক্রিস্টোফার লয়েড (এমেট ব্রাউন) রাতারাতি স্টার বনে যান।
ডকের পাগলামি, মার্টির অস্বাভাবিকতা আর হুভারবোর্ড অথবা ডিলরিয়েন গাড়িটিই হয়তো দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিল। মুভিতে এই সত্যটাই আমাদের বুঝাতে চাওয়া হয়েছে যে আমাদের ভবিষ্যৎ আসলে আমাদের অতীতের উপর নির্ভর করে।
তবে সাফল্যমন্ডিত এই মুভির শুরুটা সহজ হয়নি। চিত্রনাট্যকার বব গ্যাল হলিউডের ৪০টি প্রযোজক প্রতিষ্ঠানের কাছে গেলেও কেউ এটিকে পাত্তা দেয়নি। শেষমেশ ইউনিভার্সাল পিকচার এই মুভি বানানোর সিদ্ধান্ত নেয় এবং প্রযোজকের চেয়ারে বসায় স্টিভেন স্পিলবার্গকে।
হয়তোবা তারা সত্যিই টাইম ট্রাভেল করে ভবিষ্যতে গিয়ে এই মুভির কদর দেখে এসেছিলেন আর সেকারণেই এটি বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
অনেকদিন ধরেই গুঞ্জন চলছিল, বাজারে আসছে ‘ব্যাক টু দ্য ফিউচার’ সিনেমার চতুর্থ পর্ব। কিন্তু দর্শকদের হতাশ করে সে সম্ভাবনা একেবারেই নাকচ করে দিলেন এই ট্রিলজির পরিচালক রবার্ট জেমেস্কিস।