শীতে নাক, কান ও গলা- শরীরের এই তিনটি অংশে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যাধি হতে পারে। সাধারণ হাঁচি-সর্দি থেকে শুরু করে গলার স্বর বসে যাওয়া এসবই শীতের প্রচলিত রোগ। এছাড়া যাদের হাঁপানি বা অনেক দিনের কাশির সমস্যা আছে, ঠান্ডা আবহাওয়ায় তাদের কষ্টও বাড়ে।
ফুসফুসের নিউমোনিয়াও এ সময় দেখা যায়। প্রায়ই দেখা যায় দুই তিন দিন নাক বন্ধ থাকে বা নাক দিয়ে পানি ঝরে, গলা ব্যথা করে, শুক্না কাশি থাকে, জ্বরও থাকতে পারে।
এগুলো বেশিরভাগই ভাইরাসজনিত এবং অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়াই ভালো হয়ে যায়। তবে শুকনো কাশিটা কয়েক সপ্তাহ ভোগাতে পারে। ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে।
আর গরম পানিতে গড়গড়া করতে হবে। গরম চা বা গরম পানিতে আদা, মধু, লেবুর রস, তুলসি পাতার রস মিশিয়ে পান করলে উপকার পাওয়া যায়। আরেকটি ভাইরাসজনিত রোগ হচ্ছে 'সিজনাল ফ্লু'। এর লক্ষণ সাধারণ সর্দির মতোই। এর জন্য আলাদা কোনো চিকিৎসারও প্রয়োজন হয় না।
আবার শীতের শুরু বা গরমের শেষে সাইনাস আর টনসিলের প্রদাহ দেখা দিতে পারে। ঠান্ডা পানীয় বা আইসক্রীম খাওয়ার কারনে ছোটরাই সাধারণত টনসিলের সমস্যা বেশি হয়।
শীত মৌসুমে পানি কম খাওয়া হয়। পিপাসা বোধ না হওয়ার কারেনই এমনটি হয়। পিপাসাবোধ না হলেও প্রয়ােজনীয় পানি পান করাটা জরুরি।
আর্থ্রাইটিস বা বাতের ব্যথা শীতে বাড়তে পারে। শীতের শুষ্কতায় অনেকের ত্বক ফেটে যায় এবং চর্মরোগ দেখা দেয়। তীব্র শীতে অনেকের হাতের আঙ্গুল নীল হয়ে যায়। এমনকি হৃদযন্ত্রের রক্তনালি সঙ্কুচিত হয়ে হার্ট অ্যাটাকও হতে পারে।
ঠান্ডা আবহাওয়ায় রক্তচাপ বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে যদি ঠান্ডার ওষুধে সিউডো এফেড্রিন বা ফিনাইলেফ্রিন থাকে, তবে রক্তচাপ বাড়ে।
সতর্কতা : ঠান্ডাজনিত রোগ শীতেও হতে পারে। গরমেও হতে পারে। অতিরিক্ত কাপড়ে ঘেমে ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। বয়স্ক ও বাচ্চাদের আরো বেশি হয়। ঠান্ডা বাতাস এড়িয়ে চলুন। ঘাম হলে মুছে ফেলুন। ঠান্ডা পানি খাওয়া বা গোসল করা, ধূলাবালি, দূষিত পানি ইত্যাদি পরিহার করলে নিরাপদ থাকা সম্ভব।
রোগ যাতে অন্যদের আক্রান্ত করতে না পারে, সে লক্ষ্যে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাসায় থাকাই ভালো। বিশেষ করে শিক্ষার্থী যারা আক্রান্ত তাদের অবশ্যই বাসায় রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম।
পরামর্শ দিয়েছেন : অধ্যাপক ডা. এম বি এম আব্দুল্লাহ
মেডিসিন অনুষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
শ্রুতিলিখন : তৌহিদ আলম