দুয়ারে কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ১১তম আসর। ক্রিকেট মহাযজ্ঞের এ আসর মাঠে গড়ানোর আর বাকি মাত্র ৪ দিন। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের ভেন্যুতে গড়াচ্ছে বিশ্ব সেরা নির্ধারণের লড়াই। এবার এতে অংশ নিচ্ছে ১৪টি দল। বিশ্বকাপের এই দলগুলোর ধারাবাহিক পরিচিতির ৭ম পর্বে আজ থাকছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড।
ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেমিফাইনালে সবচেয়ে বেশি সংখ্যকবার হেরেছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল। বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনাল খেলেছিল ১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৭ এবং ২০১১ সালে।
টুর্নামেন্টের হট ফেভারিট দল হয়ে আসরে অংশ নিয়ে ছয় বার সেমিতে উঠলেও ফাইনাল খেলা হয়নি তাদের। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি নিউজিল্যান্ডও খেলবে ঘরের মাটিতে। সাম্প্রতিক রেকর্ড অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অঙ্গনে নিজেদের মাঠে অন্যতম শক্তিশালী প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড দল। স্বাগতিক হিসেবে এবারো তাদের থেকে বড় প্রত্যাশাই থাকবে ভক্তদের।
এ পর্যন্ত তারা ১০টি বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে মোট খেলেছে ৭০টি ম্যাচ, জিতেছে ৪০টি, হেরেছে ২৯টি এবং ১টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে।
এছাড়া বিশ্বকাপের আগে শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের সাথে সিরিজ জিতে দেশের মাটিতে নিজেদের ভালোভাবেই ঝালিয়ে নিয়েছে কিউইরা।
অসাধারণ বোলিং এবং ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং নৈপুণ্যে এ বিশ্বকাপের জন্য নিজেদের সাজিয়ে নিয়েছে দারুনভাবে। অতীতের তুলনায় এবারের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড বেশি আত্মবিশ্বাসী বলে জানিয়েছেন ব্লাকক্যাপসদের সাবেক অধিনায়ক ড্যানিয়েল ভেট্টরি।
নিউজিল্যান্ড এবারের বিশ্বকাপ শিরোপা জিতেও যেতে পারে বলে মনে করছেন ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক রাহুল দ্রাবিড় ও গ্রায়েম স্মিথ । কারণ তাদের সব ক্রিকেটারই দুর্দান্ত ফর্মে। ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং তিন বিভাগেই দারুন ফর্মে নিউজিল্যান্ড। বর্তমান আইসিসি ওয়ানডে র্যাংকিংয়ে তারা ৬ষ্ঠ স্থানে রয়েছে।
কিউই দলে রয়েছে আক্রমণাত্মক ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম, মার্টিন গাপটিল, কেন উইলিয়ামসন, রস টেইলর, কোরি অ্যান্ডারসন, গ্র্যান্ট ইলিয়টের মতো ব্যাটসম্যানরা। এমন আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যানদের নিয়ে কিউইদলের অধিনায়ক বিশ্বকাপ স্বপ্নে খুবই আশাবাদী। এদিকে, কিউই ব্যাটসম্যানরা দলের জন্য যে কোন স্লটে নেমেই ভালো খেলার ক্ষমতা রাখে।
কিউইদের প্রধান শক্তি তাদের পেস বোলিংয়ে। বোলিংয়ে অভিজ্ঞ পেসার কাইল মিলসের সঙ্গে আছেন টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, মিশেল ম্যাগক্লেনগান ও অ্যাডাম মিলনেরা। স্পিনেও খুব একটা পিছিয়ে নেই তারা। অভিজ্ঞ ড্যানিয়েল ভেট্টোরির সাথে দলে আছেন নাথান ম্যাককুলাম, পার্টটাইম অফস্পিনার কেন উইলিয়ামসন।
‘গ্রুপ-এ’ তে নিউজিল্যান্ড লড়বে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তানের সাথে। ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে এবারের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ১৪ ফেব্রুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে নিজেদের বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে কিউইরা ।
এক নজরে নিউজিল্যান্ড দল
বিশ্বকাপে অংশগ্রহন: ১৯৭৫ থেকেই অংশ নেয়।
সেরা সাফল্য: ১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৭ ও ২০১১ সালের সেমিফাইনাল।
কোচ: মাইক হেসন (নিউ জিল্যান্ড)
১৫ সদস্যের বিশ্বকাপ স্কোয়াড: ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম (অধিনায়ক), ট্রেন্ট বোল্ট, গ্রান্ট এলিয়ট, টম লাথাম, মার্টিন গাপটিল, মিশেল ম্যাগক্লেনগান, নাথান ম্যাককুলাম, কাইল মিলস, অ্যাডাম মিলনে, ড্যানিয়েল ভেট্টোরি, কেন উইলিয়ামসন, কোরি অ্যান্ডারসন, টিম সাউদি, লুক রঞ্চি ও রস টেইলর।
যারা নজর কাড়তে পারেন: কোরি অ্যান্ডারসন, কেন উইলিয়ামসন, অ্যাডাম মিলনে, রস টেইলর।
বিশ্বকাপ মিস করছেন এমন তারকা: জেসি রাইডার, জিমি নিশাম, জেমস ফ্রাংকলিন, ম্যাট হেনরি ।
শেষ বিশ্বকাপ হতে পারে: ড্যানিয়েল ভেটোরি, ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম, কাইল মিলস, রস টেইলর।