সঙ্গীতের রয়েছে নানা ধরণ, নানা স্বাদ। মানুষের ভিন্ন ভিন্ন পছন্দের কারণে গানের ধরণও বৈচিত্র্যময় হয়। আবার মনের অবস্থার উপরও মানুষের গানের পছন্দ নির্ভর করে। তাই ফোক, রক, মেটাল, পপ, জ্যাজ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরণের গানের জন্ম হয়েছে। ভিন্ন রকমের কথা, সুর, তাল, বাদ্যযন্ত্র দিয়ে এসব গানে বৈচিত্র্য আনা হয়েছে। এরকম বিভিন্ন ঘরানার গান সম্পর্কে জানতেই আমাদের এই আয়োজন। আজকে জানবো কান্ট্রি মিউজিক নিয়ে।
আমেরিকার পপুলার মিউজিকের মধ্যে কান্ট্রি মিউজিক খুবই জনপ্রিয় একটি ধারা। তবে অনেকে কান্ট্রি মিউজিক বলতে দেশাত্মবোধক গান মনে করে থাকেন। কিন্তু এটা মোটেও তা নয়। কান্ট্রি মিউজিক সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরণের গানের একটি ধারা।
১৯২০ সালের দিকে এই ঘরানার গানের জন্ম হয়। আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলেই মূলত উদ্ভব এবং চর্চা শুরু হয় এ গানের। ধীরে ধীরে দক্ষিণ এবং দক্ষিণপূর্ব অঞ্চলগুলোতে যেমন অ্যারিজোনা, নিউ মেক্সিকো, টেক্সাস, অ্যালাব্যামা, জর্জিয়া, সাউথ ক্যারোলিনা, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়াসহ আমেরিকার আরও অনেক অঙ্গরাজ্যে কান্ট্রি মিউজিক ছড়িয়ে পড়ে। নিজস্ব ঘরানা এবং সংস্কৃতির সাথে মিল থাকায় আমেরিকানদের মাঝে খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠে এ ধরণের গান।
কান্ট্রি মিউজিক জনপ্রিয়তা পায় চল্লিশের দশকের দিকে। ওয়েস্টার্ন মিউজিকের জনপ্রিয়তাকে ছাপিয়ে যায় নতুন এ ধারা।
কান্ট্রি মিউজিকের উৎস মূলত আমেরিকান ফোক গান এবং ওয়েস্টার্ন মিউজিক। ব্লুজের প্রভাবও এতে ভালোভাবেই দেখা যায়। লোকগাথা, কবিতা এবং নাচের সাথেও অনেক সময় মিল থাকে কান্ট্রি মিউজিকের। কাউবয় গান, আইরিশ এবং কেলটিক ফিডল গান আর ইউরোপের অনেক ধরণের গানেরও প্রভাব আছে এর উপর।
কান্ট্রি মিউজিকে তার সংবলিত বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার বেশি দেখা যায় যেমন ইলেকট্রিক ও অ্যাকোস্টিক গিটার, ইউকেলেলে, ব্যাঞ্জো, ডোব্রো, ফিডল ইত্যাদি। এর সাথে হারমোনিকা, পারকাশন, ড্রামস, পিয়ানো, ভায়োলিন এগুলোও নতুন মাত্রা যোগ করে।
ব্লুজ মিউজিকের সাথে কান্ট্রি মিউজিকের একটা বিশেষ মিল রয়েছে। এ দুটো ধারার গানই ছিল আমেরিকার শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের গাওয়া গান। তবে পার্থক্য হচ্ছে ব্লুজ ছিল কৃষ্ণাঙ্গদের গান আর কান্ট্রি মিউজিক ছিল শ্বেতাঙ্গদের।
কান্ট্রি মিউজিক শিল্পীদের মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছেন জন ডেনভার। তার গাওয়া টেক মি হোম কান্ট্রি রোডস, অ্যানি’স সং, লিভিং অন অ্যা জেট প্লেন অসাধারণ কিছু গান। এছাড়াও হ্যাঙ্কস উইলিয়ামস, জনি ক্যাশ, উইলি নেলসন, ডন ম্যাকলিন, টেইলর সুইফট এনারাও কান্ট্রি মিউজিক শিল্পী।