জার্মানির বার্লিনে গত বুধবার একটি বিচিত্র ধরণের জাদুঘর স্থায়ীভাবে চালু করা হয়েছে। অন্যান্য যেকোনো জাদুঘরের চেয়ে এটি একেবারেই ব্যতিক্রম, কিছুটা আশ্চর্যজনকও বটে। জাদুঘরটি সাজানো হয়েছে মানুষের মৃতদেহ দিয়ে।
অনেকগুলো মানবদেহের চামড়া ছাড়িয়ে সেগুলো সংরক্ষন করে মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রদর্শিত হয়েছে এই জাদুঘরে।
জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করেছেন জার্মানির অঙ্গসংস্থানবিদ গুন্থার ভন হ্যাগেনস এবং তার স্ত্রী অ্যাঞ্জেলিনা ভয়েলি। তারা প্রদর্শিত মৃতদেহগুলোর মধ্যে সিলিকন রাবার এবং রেজিন নিষিক্ত করে সেগুলো সংরক্ষন করেছেন। ভন হ্যাগেনস নিজের সৃষ্ট এই পদ্ধতিটির নাম দিয়েছেন ‘প্লাস্টিনেশন’।
ড. ডেথ নামে পরিচিত ভন হ্যাগেনস তার এই বিতর্কিত জাদুঘর প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৯৫ সাল থেকে যুদ্ধ করে আসছেন। স্থানীয় প্রশাসন এভাবে মৃতদেহ প্রদর্শনকে বেআইনি বলে অভিহিত করেছেন।
তারা মৃতদেহ যথাযথভাবে সংস্কার করার এবং প্রদর্শন নিষিদ্ধ করার দাবী জানান। গত অক্টোবর আদালতে এটা নিয়ে মামলা হয়ে ভন হ্যাগেনস জয়ী হন মামলায়।
এখন তার এই জাদুঘর স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বার্লিনের আলেকজেন্ডারপ্লেটজ-এ অবস্থিত এটি।
১,২০০ বর্গমিটারের এই জাদুঘরে ২০টি চামড়া ছাড়ানো মৃতদেহ প্রদর্শন করা হয়েছে। এগুলোর বিভিন্ন শারীরিক অঙ্গ, হাড়, পেশি এবং শিরা-উপশিরা দেখা যাচ্ছে। বসা, দৌড়ানো, খেলাধূলারত অবস্থায় রয়েছে এ দেহগুলো।
ভয়েলি বলেন, এই জাদুঘর এখানে ঘুরতে আসা মানুষদেরকে মানুষের দেহ এবং জীবনধারণ সম্পর্কে নতুন ধারণা দেবে। তিনি আরও বলেন, গত ৬ মাসে এখানে আসা দর্শনার্থীদের মধ্যে করা এক জরিপ থেকে জানা গেছে, তাদের মধ্যে ৯ শতাংশ ধূমপান ছেড়ে দিয়েছে, ২৩ শতাংশ ব্যায়াম করার পরিমাণ বাড়িয়ে দিয়েছে এবং ৩০ শতাংশ মানুষ তাদের খাবার সম্পর্কে সচেতন হয়েছে।
তবে শুধু মৃতদেহ সংরক্ষণই নয়, এটিকে একটি শিল্পকর্ম বলে অভিহিত করেছেন ৬১ বছর বয়সী ডেটলেফ ভন ওয়াগনার। তিনি নিজেও তার মৃত্যুর পর প্লাস্টিনেশনের জন্য তার মৃতদেহ দান করতে সম্মত হয়েছেন।