ইলেক্ট্রোপ্লেটিং: ধাতব বস্তু হবে আরও চকচকে

Electroplating শব্দটি শুনে কি মনে হচ্ছে ? ইলেক্ট্রিক প্লেট কিংবা বৈদ্যুতিক উপায়ে প্লেট তৈরী করা এই জাতীয় কিছু ??

আসলে এদের কোনোটিই নয় ।

ইলেক্ট্রোপ্লেটিং হচ্ছে তড়িৎ বিশ্লেষণ পদ্ধতিতে কোনো ধাতুর স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্যে এর উপর যে কোনো ধাতুর প্রলেপ দেয়া।

লোহা বা কপারের তৈরী ধাতুর উপর নিকেল বা ক্রোমিয়ামের প্রলেপ সচরাচর ব্যাবহার করা হয় । 

এই প্রক্রিয়ায় সাধারণত একটি সক্রিয় ধাতুর উপর অন্য একটি কম সক্রিয় ধাতুর আবরণ দেয়া হয়। এভাবে যে ধাতুর উপর প্রলেপ দেয়া হয় সেই ধাতব পদার্থের স্থায়িত্ব ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়। যেমনঃ লোহার উপর নিকেল বা ক্রোমিয়ামের আবরণ দেয়া হয়।

যে কারণে ইলেক্ট্রোপ্লেটিং করা হয় তা হলোঃ
  • ধাতুর মরিচা প্রতিহত করা
  • ঘর্ষণজনিত ক্ষয় রোধ করা
  • ধাতুকে অধিকতর কোমল এবং নমনীয় করা
  • ধাতুর সৌন্দর্য বর্ধন করা
  • ধাতুর স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করা 

১৮০৫ সালে ইতালিয়ান রসায়নবিদ লুইজি ভি. ব্রুগন্যাটিলি সর্বপ্রথম ইলেক্ট্রোপ্লেটিং এর ধারণা দেন।

প্রক্রিয়াঃ

যে ধাতু দিয়ে প্রলেপ দিতে হবে, তার লবণের দ্রবনে ঐ ধাতুটির তৈরী একটি দন্ড নিমজ্জিত করে ব্যাটারির অ্যানোডের ( ধনাত্মক প্রান্ত) সঙ্গে সংযোগ দেয়া হয়। এবার যেটির উপর প্রলেপ দেয়া হবে, সেটিকে ঐ দ্রবনে নিমজ্জিত করে ব্যাটারির ক্যাথোডের ( ঋণাত্মক প্রান্ত ) সঙ্গে যুক্ত করে দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি করা হয়। ফলে দ্রবনে উপস্থিত লবণের ক্যাটায়ন ( + আয়ন ) ক্যাথোডে আকৃষ্ট হয়। অর্থাৎ, অ্যানোড থেকে যত পরিমাণ ইলেকট্রন ত্যাগ হচ্ছে ঠিক তত পরিমাণ ইলেকট্রন ক্যাথোডে জমা হবে। এই ইলেকট্রন আদান প্রদানের মাধ্যমে ইলেক্ট্রোপ্লেটিং করা হয়।     

লোহা বা সিলভারের বেল্টের ঘড়িগুলোর ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা যায়, অনেক দিন হয়ে গেলেও কিছু কিছু ঘড়ির বেল্টের চকচকে অবস্থা কমে না। এর কারণ হলো ঐ বেল্টের উপর নিকেল বা ক্রোমিয়ামের হালকা একটি প্রলেপ দেয়া হয়েছিলো।

ইদানিংকালে উন্নত দেশগুলোতে ইলেক্ট্রোপ্লেটেড ভাস্কর্য তৈরী হচ্ছে। এর কারণ যেনো এটি দীর্ঘ সময় অক্ষত অবস্থায় থাকে।

এছাড়া, নিকেল বা ক্রোমিয়ামের প্রলেপ গাড়ির বিভিন্ন অংশের উপরে বিশেষ করে চাকার রিমে দেখতে পাওয়া যায়। জুয়েলারিতেও ক্রোমিয়াম প্রলেপের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য।   

 

            

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন