মাঝে মাঝে পত্রিকায় কিংবা টিভির খবরে দেখি, মিছিল বা দাঙ্গার সময় টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করা হয়। তখন মাথায় আসে, এই গ্যাস কি আসলেই কাঁদায়??
হ্যাঁ, আসলেই এই গ্যাস কাঁদায়।
একটি নির্দিষ্ট গ্যাসের নাম টিয়ার গ্যাস না। কয়েকটি গ্যাসের একত্রিত রূপ হচ্ছে এই টিয়ার গ্যাস। অনেকগুলো মিহি গুঁড়া পাউডার (এতে ক্ষার জাতীয় পদার্থের উপস্থিতি থাকে) এবং তরল রাসায়নিক পদার্থের সমন্বয়ে এই টিয়ার গ্যাস গঠিত হয়। এই টিয়ার গ্যাস এমন এক ধরনের গ্যাস যা মানুষের চোখের স্নায়ুগুলোকে সাময়িক সময়ের জন্যে, সর্বোচ্চ ৪৫ মিনিটের জন্যে অক্ষম করে দেয়। এর প্রভাবে চোখে প্রচণ্ড জ্বালা যন্ত্রণা হয়। ওসি ( oleoresin capsicum) , সিএস (2-chlorobenzalmalononitrile ), সিআর (dibenzoxazepine ), সিএন বা ফিনাসিল ক্লোরাইড (Phenacyl chloride), ননিভ্যামাইড ( nonivamide ), ব্রোমোয়াসিটন (bromoacetone ), জাইলিল ব্রোমাইড (xylyl bromide ), পেঁয়াজ থেকে সংগৃহীত সাইন-প্রোপ্যানেথিয়াল-এস-অক্সাইড ( syn-propanethial-S-oxide ) যৌগের সমন্বয়ে টিয়ার গ্যাস তৈরী করা হয়।
এই গ্যাসের প্রভাবে সাময়িক সময়ের জন্যে চোখ, নাক, মুক, ফুসফুস সহ কিছু অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করে দেয়।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে আগে এ গ্যাসের প্রচলন শুরু হয়।
টিয়ার গ্যাসের প্রকারভেদঃ টিয়ার গ্যাসের কার্যক্ষমতার উপর নির্ভর করে এর কয়েকটি ভাগ করা যায়। এগুলো হচ্ছেঃ
- CS, CS1, CS2 :
এদের রাসায়নিক সংকেত C10H5ClN2। এর মূল উপাদান হচ্ছে সিলিকা এরোজেল। CS থেকে CS1 এবং CS2 অধিক ঘন হয়। সর্বপ্রথম ১৯২৮ সালেআমেরিকান বিজ্ঞানী বেন করসন এবং রজার স্টাউটন CS গ্যাসের সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন।
- CN (ফিনাইল ক্লোরাইড) :
রাসায়নিক সংকেত C8H7ClO। CS এর চেয়ে অধিক কার্যক্ষমতা এই CN গ্যাসের। এই গ্যাস চোখের স্থায়ী ক্ষতি করতেও সক্ষম।
- CR (Dibenzoxazepine) :
CS গ্যাসের বিকল্প হিসেবে বর্তমানে এই গ্যাস ব্যবহার করা হয়।
- OC :
মরিচের গুঁড়া থেকে তৈরি কাঁদুনে গ্যাস এই ভাগের অন্তর্গত।
মূলত রাসায়নিক অস্ত্র হিসেবেই এর ব্যবহার চোখে পড়ে। যুদ্ধের সময়, কিংবা কোনো দাঙ্গা বা গোলমালের সময় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এই গ্যাসের ব্যবহার করে থাকে।