উড়াল দিবো আকাশে

মাথার ওপর দিয়ে যখনই ডানা মেলে বিমান উড়ে যায়, তোমাদেরও নিশ্চয়ই ইচ্ছে হয় এমন করে ডানা মেলে উড়ে যেতে। মানুষ পাখির মতো উড়তে না পারলেও এই অক্ষমতা পূরণ করেছে বিমান। মুহূর্তের মধ্যেই যেকোনো জায়গায় কোন ঝামেলা ছাড়া আমরা উড়ে যাচ্ছি বিমানে চড়ে। বিমানে চড়া খুব মজার হলেও যারা এটা চালান, তাঁদের কিন্তু বহু বছরের পড়াশোনা এবং অনুশীলনের পরই বিমানচালক হওয়ার সুযোগ মেলে। তা হবেই না বা কেন! একটু ভুল হলেই সব যাত্রীসহ বিমান সোজা মাটিতে পড়বে। বিমানচালনা বিদ্যাকে ইংরেজিতে বলে ‘এভিয়েশন’ (Aviation) এভিয়েশনে ছোট বড় অনেক ধরণের বিষয় আছে যেগুলো পাইলটদের খুব সাবধানে মেনে চলতে হয়। আজকে আমরা এমন কিছু ব্যাপার আলোচনা করবো।

পৃথিবীতে ছোট বড় অনেক প্রতিষ্ঠান আছে যারা সাধারণ যাত্রীবাহী বা পণ্যবাহী বিমান তৈরি করে।এদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এয়ারবাস (ইউরোপ), বোয়িং (ইউএসএ), বোম্বারডিয়ার (কানাডা), এমব্রেয়ার (ব্রাজিল), এবং ইউনাইটেড এয়ারক্রাফট করপোরেশন (রাশিয়া)। এছাড়া, বিমানের ইঞ্জিন তৈরিতে জেনারেল ইলেকট্রিক (ইউএসএ), রোলস রয়েস (যুক্তরাজ্য), প্র্যাট এন্ড হুইটনি (ইউএসএ) বিশ্বজুড়ে সমাদৃত।

         

যারা বিমান চালান তাঁদের পাইলট বলা হয় তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু তা ছাড়াও এভিয়েশনে যারা বিমান চালান, এবং যারা তাঁদের সহযোগিতা করেন, তাঁদের এভিয়েটর (Aviator) বলা হয়। আমরা জানি যে বিমান উড্ডয়নের আগে কিছুটা সময় মাটিতে চলে গতি অর্জন করে। মাটিতে বিমানের এই চলাকে ট্যাক্সিং (Taxiing) বলে। মাটি থেকে উড্ডয়নকে বলা হয় টেক অফ (Takeoff). বিমান যতটা উঁচু দিয়ে চলে তাকে বলে Altitude। বিমান উড়ে চললেও যেকোনো জায়গা দিয়ে খুশি যেতে পারে না। বিমানেরও চলার জন্য নির্দিষ্ট পথ আছে, একে বিমানের কোর্স বলে। এই কোর্স থাকার বড় সুবিধা হচ্ছে জরুরী অবস্থায় বিমানের অবতরণ। অর্থাৎ, এই কোর্স দেখে বিমানের পাইলট বুঝতে পারে কোথায় তাকে বিমানটিকে অবতরণ করতে হবে। কোর্স দেখে পাইলট এটাও বুঝে নেয় যে কোন বিমানবন্দরটি সবচেয়ে কাছে বিমান থেকে। আবার এক দেশের বিমান অন্য দেশের সীমানা অনুমতি ছাড়া পার হতে পারে না।

বিমানচালনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস হল ম্যাপ, একে চার্টও বলা হয়। এভিয়েশন ম্যাপ সাধারণ ম্যাপের মতো হয় না। এতে এমন অনেক বিষয় থাকে যা সাধারণ ম্যাপে থাকে না। এভিয়েশন ম্যাপ বা চার্ট তিন ধরণের হয়ে থাকে। World Aeronautical Chart, Sectional Chart, এবং VFR Terminal Chart। 

World Aeronautical Chart তুলনামুলকভাবে অনেক বড় জায়গা প্রদর্শন করে। এর স্কেলের পরিমাপ হল ১:১০০০০০০। Sectional Chart ৩৪০×৩৪০ মাইলের জায়গা প্রদর্শন করে। এর স্কেলের মাপ হল ১:৫০০০০০। VFR Terminal Area Chart যেকোনো বড় এয়ারপোর্ট টার্মিনালের ম্যাপ প্রদর্শন করে। এর ম্যাপের পরিমাপ ১:২৫০০০০।

যেকোনো বিমানবন্দরের আশেপাশে বহুতল ভবন নির্মাণের ওপর বিশেষ নিয়ম জারি করা হয়। বিমানবন্দরের আশেপাশে উঁচু দালান থাকলে তা বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণে সমস্যা সৃষ্টি করবে। ইউরোপে এমন কোন নির্দিষ্ট সীমা না থাকলেও ২০০ মিটারের বেশী উঁচু দালান বিমানবন্দরের আশেপাশে তৈরি করতে বেশ ঝক্কি পোহাতে হয়।কানাডাতে এর সীমা ২০০ মিটার। 

 

    

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন