ওয়াটার পোলো এক ধরনের জলক্রীড়া যা বল সহযোগে দলগতভাবে জলে খেলা হয়। তবে জলের এই ওয়াটার পোলো খেলার সাথে হ্যান্ডবল খেলার মিল পাওয়া যায়। হ্যান্ডবল খেলার মতো হাতে পাস আর বল শুটের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়ে স্কোর করার চেষ্টায় ব্যস্ত থাকে ওয়াটার পোলোর খেলোয়াড়রা।
দেশীয় মেলার উৎসবে সাঁতারের দক্ষতা এবং শক্তি্র প্রদর্শন হিসেবে উনিশ শতকের শেষের দিকে ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে ওয়াটার পোলো খেলার প্রচলন শুরু হয় যা পরবর্তীতে ১৯০০ সালে আধুনিক অলম্পিকে পুরুষদের জন্য অর্ন্তভুক্ত করা হয়। বর্তমানে ইউরোপ, আমেরিকা,কানাডা, অস্ট্রেলিয়া সহ বিভিন্ন দেশে ওয়াটারপোলো একটি জনপ্রিয় খেলার নাম। উনিশ শতকের একেবারে শেষের দিকে বৃটেনের প্রথম বাথ মাস্টার William Wilson ওয়াটারপোলো খেলার নিয়ম নীতি প্রতিষ্ঠা করেন। ওয়াটারপোলো খেলার দুই দলেই থাকে ১৩ জন করে খেলোয়াড় যার সাতজন থাকে পুলে। একজন গোল রক্ষক ছাড়া বাকি ছ্য় জন ফিল্ড বা পুলের প্লেয়ার থাকে। পুলের দৈর্ঘ্য ২০মিটার (মহিলা), ৩০ মিটার (পুরুষ); প্রস্থ ১৭ মিটার। পুলের গভীরতা হবে কমপক্ষে ১.৮ মিটার বা তার বেশি। খেলার উপকরণ হিসেবে থাকে ওয়াটারপোলো বল, কেপ গোলপোস্ট যা পানিতে ভাসমান অবস্থায় থাকে। সুইমিং(বল ছাড়া/সহ), এগবিটার কিক, থ্রোয়িং, ক্যাচিং, শুটিং এর মাধ্যমে প্রতিপক্ষের গোলবারে বল পৌঁছে দেওয়ায় খেলোয়াড়দের মূল লক্ষ্য থাকে। গোলকিপার ছাড়া বাকি সবাই অফেন্সিভ ও ডিফেন্সিভ খেলতে পারে আর গোলরক্ষক প্রতিপক্ষের শুটিং হতে তার গোলবার রক্ষা করে।
খেলাটি ৮ মিনিট করে চারটি পিরিয়ডে খেলা হয় যার হাফ টাইমে ৫ মিনিট বিরতি এবং প্রথম ও তৃতীয় পিরিয়ডের পর থাকে ২ মিনিটের বিরতি। খেলা শুরুর মুহূর্তটা খুবই উপভোগ্য; দুই দলের খেলোয়াড় তাদের নিজ নিজ গোল লাইনে দাড়ায়। আর বল থাকে সেন্টারে। যখন রেফারি শুরু করার সিগনাল দেন তাদের মধ্যে প্রতিযোগীতা শুরু হয় বল হাতে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার। বল ধরার সময় খেলোয়াড় কেবল এক হাতই ব্যবহার করতে পারে, তবে গোলরক্ষক তার গোলবারের ৫ মিটারের মধ্যে উভয় হাত ব্যবহার করতে পারে।
খেলা শেষে যে দলের স্কোর বেশি থাকে সে দল বিজয়ী হয়ে থাকে। নির্ধারিত সময় শেষে যদি খেলা টাই হয় তবে পেনাল্টি শুটআউটের মাধ্যমে বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়।
অলিম্পিক ছাড়াও ওয়াটার পোলো খেলার বড় প্রতিযোগিতা হচ্ছে ওয়াটার পোলো ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ। এবারের রিও অলিম্পিকে ওয়াটার পোলোর পুরুষ বিভাগে ক্রোয়েশিয়াকে ১১-৭ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে সার্বিয়া। অন্যদিকে, মহিলা বিভাগে ইতালিকে ১২-৫ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।