মানুষ ভাষার মাধ্যমে তার মনের ভাব অন্যের কাছে প্রকাশ করে। অনেক সময় তা আকার-ইঙ্গিতেও প্রকাশ করে থাকে। কিন্তু পশুপাখি তাদের মনের ভাব কি প্রকাশ করে? অবশ্যই করে। কিন্তু কীভাবে?
আসলে মানুষের মত প্রাণীদেরও মনের ভাব প্রকাশের জন্য রয়েছে ভাষা এমনকি উপভাষাও। এসব প্রাণী তাদের ডাকের মাধ্যমে অন্যের কাছে ভাব প্রকাশ করতে পারে। তবে সেগুলো বোঝা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। ভিন্ন ভিন্ন প্রাণীর ডাক বিভিন্নরকম হয়ে থাকে। এমনকি একই প্রজাতির প্রাণীর বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করার জন্য তাদের ডাকের মধ্যে পার্থক্য দেখা দিতে পারে। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে সাপ্তাহিক ‘প্রাণীবিষয়ক অদ্ভুত প্রশ্নে’ এরকমই এক প্রশ্ন এসেছিল যে “প্রাণীদেরও কি ভাষা রয়েছে?”
স্পার্ম তিমি ‘ক্লিক’ জাতীয় শব্দ করে নিজেদের মধ্যে ভাবের আদান প্রদান করে থাকে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় জানা গেছে, বিজ্ঞানীরা ৬ বছর ধরে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে বসবাসকারী স্পার্ম তিমির ডাক বিশ্লেষণ করেছেন। তারা দেখেছেন, একটি তিমি আরেকটিকে ডাকার সময় স্বতন্ত্র একটি শব্দ করে থাকে যেমন আমরা নাম ধরে ডাকি অনেকটা সেরকম। এমনকি কিছু ডাক বিশ্লেষণ করে “আমি ক্যারিবিয়ান থেকে এসেছি, তুমি?”- এধরণের কথার অনুবাদও পাওয়া গিয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ভাব আদানপ্রদানের ভাষাও পাওয়া গিয়েছে এদের মধ্যে। এভাবে তিমিরা নিজেদের মধ্যে বন্ধন দৃঢ় করে ও সামাজিকতা বাড়ায়।
আরেকটি গবেষণায় কুকুর ও বিভিন্ন প্রজাতির নেকড়ের ২ হাজার ডাক বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে এরা ২১ রকম ভাবে ডাকে। যেমনঃ লাল নেকড়ে এবং কয়োটে (এক প্রজাতির নেকড়ে) নিজেদের মধ্যেই বিভিন্ন সুরে ডাকে কিন্তু আবার মেরু নেকড়ে সবাই একই সুরে ডাকে।
পাখিদের ডাকের মধ্যেও ভিন্নতা বেশ ভালোভাবেই পরিলক্ষিত হয়। ম্যাসাচুসেতস ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ডোনাল্ড ক্রুদসমা বলেন, কানসাস এবং ভার্জিনিয়ার দুটি মকিংবার্ডের ডাক শুনেই কোনটা কোন অঞ্চলের বলে দেয়া সম্ভব।