জেমস হ্যারিসন, যাকে ‘গোল্ডেন আর্ম’ সম্বলিত মানুষ বলা হয়। গত ৬০ বছরে ১১০০ বারের অধিক রক্ত দিয়েছেন তিনি। যার মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ার প্রায় ২০ লাখ মায়ের বাচ্চাকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে। ৮১ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ান মানুষটি গত শুক্রবার সর্বশেষ রক্ত দিয়েছেন।
হ্যারিসনের রক্তে অ্যান্টি-ডি নামের একটি অ্যান্টিবডি রয়েছে, যা নেগেটিভ রক্তের মায়েদের দেয়া হয়। এই অ্যান্টিবডি নতুন জন্ম নেয়া বাচ্চাদের হেমোলাইটিক রোগ (এইচডিএন) থেকে প্রতিরোধ করে।
এইচডিএন এর প্রভাবে রক্তশূণ্যতা, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া, এমনকি নবজাতকের মৃত্যুও হতে পারে। ১৯৬০ সালে অ্যান্টি-ডি আবিস্কারের আগে এই রোগে হাজার হাজার শিশু মারা গেছে।
অ্যাস্ট্রেলিয়ার রেড ক্রস ব্লাড সার্ভিস ৮১তম জন্মদিনের পর আর রক্ত দেয়ার অনুমতি না দেয়ার কারণে হ্যারিসন নতুন করে রক্ত দিতে পারবেন না। এ বিষয়ে তিনি বলেন, গত শুক্রবার ছিলো আমার জন্য সবচেয়ে মন খারাপের দিন। এরপর আমি আর রক্ত দিতে পারবো না। এর মাধ্যমে দীর্ঘ যাত্রা শেষ হয়েছে।
হ্যারিসন আরও বলেন, যদি তারা অনুমতি দেয় তাহলে আমি আবারও রক্ত দেয়া শুরু করবো।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে হ্যারিসনের একটি বড় ধরণের বুকের সার্জারী করা হয়, যখন একজন অপরিচিত তাকে রক্ত দিয়ে বাঁচান। ঐ সার্জারীর পর থেকে যখনই সুযোগ মেলে তিনি রক্ত দেন।
রেড ক্রসের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর রবিন বারলো বলেন, আমরা তার মতো এতো দয়াবান মানুষ পাবো না। তিনি এখনও সুস্থ্য আছেন। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি দুষ্প্রাপ্য রক্তদান করে এসেছেন।
১৯৯৯ সালে হ্যারিসনের সেবার জন্য অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়া (ওএএম) পদক দেয়া হয়। তার এই অবদানের কারণে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই রক্ত দিবেন বলে প্রত্যাশা করেন সবাই।