গরমে এখনই মন আনচান করতে শুরু করেছে শহরবাসীর! বৈশাখ পড়তে না পড়তেই ঠান্ডা কোনও জায়গার খোঁজ করছেন অনেকে। ভাবছেন, গরমের ছুটিতে এবার কোথায় যাওয়া যায়। যারা কম খরচে দেশের বাইরে একটু নিরিবিলিতে ঘুরে আসতে চান তারা যেতে পারেন ভারতের চটকপুর।
উত্তরে কাঞ্চনজঙ্ঘা আর দক্ষিণে চোখ জুড়নো সবুজ ঢেউখেলানো উপত্যকা – চটকপুরের মিঠে সৌন্দর্য উপভোগ করতে দু’টো দিন কাটিয়ে আসতে পারেন দার্জিলিং জেলার এই ঠিকানায়। সেঞ্চল অভয়ারণ্যের মধ্যে এই গ্রামের ছবিটা একেবারে পিকচার পোস্টকার্ডের কথা মনে করিয়ে দেবে। গভীর পাইন, রডোডেনড্রনের জঙ্গলের মধ্যে হারিয়ে যেতে পারেন যখন-তখন। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ছোট ছোট বাড়ির সংখ্যা হাতে গোনা যায়। ভিউ পয়েন্ট থেকে দেখা যায় ক্ষণে ক্ষণে রং বদলাতে থাকা কাঞ্চনজঙ্ঘাকে।
অভয়ারণ্যের নিভৃত পরিবেশ জায়গা করে দিয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আর প্রজাপতিকে। তাই বার্ড ওয়াচাররা খুশিই হবেন এই জায়গাটায় গিয়ে। সাড়ে সাত হাজার ফুটেরও বেশি উঁচু চটকপুরের আবহাওয়াও মনোরম। তবে বর্ষাকালটা এড়িয়ে চলাই ভাল। মৌসুমী বায়ু ঢুকে পড়ার আগে ঘুরে আসাই ভাল।
পাহাড়ের ঢাল বরাবর তাকালে খানিকটা নীচে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি শহরের ভিউও অপূর্ব। গোটা গ্রামের মোট জনসংখ্যা ১০০’র আশপাশে। কাজেই যাঁরা নিরিবিলিতে ছুটি কাটাতে ভালবাসেন, তাঁরা চটকপুরের প্রেমে পড়ে যাবেন।
শিলিগুড়ি থেকে চটকপুরের দূরত্ব কমবেশি ৭৫ কিলোমিটার। যাওয়ার রাস্তার শেষ অংশটা পেরোতেই মন জুড়িয়ে যাবে। কারণ সেই রাস্তার দু’ধারে ঘন জঙ্গল। পৌঁছনোর পর থাকার জন্য ইকো রিসোর্ট কিংবা হোম স্টে, বেছে নিন পছন্দমতো। গ্রামের আশপাশটা ঘুরে দেখতে চাইলে স্থানীয়দের জিজ্ঞাসা করে পরিকল্পনা ছকে ফেলুন।
তারপর একে একে ঘুরে দেখুন পোখরি লেক, সানরাইজ পয়েন্ট ইত্যাদি। ইচ্ছে হলে ছোটখাটো ফরেস্ট ট্রেক করতেই পারেন। তবে জঙ্গলের ভিতরে গাইড ছাড়া বেশিদূর না যাওয়াই ভাল। এই অভয়ারণ্যে হিমালয়ান ব্ল্যাক বেয়ার রয়েছে। আর রয়েছে হিমালয়ান বুলবুল, ব্লু ম্যাগপাই-সহ নানা প্রজাতির পাখি।
হাঁটতে যাওয়ার সময় অবশ্যই ক্যামেরা রেডি রাখবেন। তবে যেটা এখানে সবচেয়ে বেশি করে চোখে পড়বে, সেটা হল কাঞ্চনজঙ্ঘার নানা রকম রূপ। আকাশ পরিষ্কার থাকলে পাহাড়ের গায়ের রঙ পাল্টানো দেখেই সময় কেটে যাবে।
টাইগার হিলের পাশের পাহাড়টাই চটকপুর হিল। ফলে এখান থেকে সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখার অভিজ্ঞতা টাইগার হিলের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। ফিরে আসার পরেও মনের মধ্যে রেশ থেকে যাওয়ার মতো গ্রাম চটকপুর। গরমের ছুটিতে পাড়ি জমালে মন্দ কী!
এবেলা থেকে সংগৃহীত