শরীরকে সুস্থ এবং কর্মক্ষম রাখতে প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।
সাম্প্রতিক সব গবেষণাতেও এর সপক্ষে যুক্তি পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু আমাদের আদিম পূর্বপুরুষেরা ঘুমানোর জন্য এতোটা সময় পেতেন না।
ক্যালিফোর্ণিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে গবেষণা চালান ৯৪ জনের উপরে।
এদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার সাথে আমাদের আদিম শিকারি পূর্বপুরুষদের অনেকাংশেই মিল আছে।
এরা হচ্ছেন তানজানিয়া ন্যাশনাল পার্কের হাদজা গোষ্ঠী, বলিভিয়ার আন্দিজ পর্বতমালার পাদদেশে বসবাসকারী সিমানে গোষ্ঠী আর আফ্রিকার কালাহারি মরুভূমিতে বাস করা সান গোষ্ঠীর বাসিন্দা।
গবেষণায় তারা কতক্ষন ঘুমায় আর কতক্ষন জেগে থাকে সেটা দেখা হয়। পাশাপাশি শীত ও গরমের সময় তাদের ঘুমানোর পরিমাণ, পরিবেশের তাপমাত্রা ও সেই সাথে তাদের দেহের তাপমাত্রা এসব বিষয়ও পর্যালোচনা করা হয়।
গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যসমূহ:
– তারা প্রতিদিন গড়ে ৬.৪ ঘণ্টা ঘুমায়।
– তারা সাধারণত দিনে ঘুমায় না এবং রাতে ঘুমের মধ্যে জেগে উঠে না।
– গরমকালের চেয়ে শীতকালে তারা একঘণ্টা বেশি ঘুমায়।
– সূর্য ডোবার পরপরই তারা ঘুমিয়ে পড়ে না। এর প্রায় ৩-৪ ঘণ্টা পরে ঘুমায়।
– তাদের স্বাস্থ্য খুবই ভালো এবং সমসাময়িক আমেরিকানদের চাইতে তাদের ফিটনেস অনেক ভালো।
এই গবেষকদলের প্রধান জেরোমি সিজেল বলেন, ‘আমাদের ধারণা ছিলো আধুনিক মানুষ তাদের পূর্বপুরুষদের চাইতে কম ঘুমায়। আমরা ভেবেছিলাম আদিম মানুষ সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়ের অর্থাৎ ১০-১২ ঘণ্টা প্রায় পুরো সময়টাই ঘুমিয়ে কাটাতো। কিন্তু এটি সঠিক নয়’।
আরেকটা মজার তথ্য বেরিয়ে এসেছে এ গবেষণা থেকে, আদিম মানুষদের ইনসোমনিয়া বলে কিছু ছিল না। তাদের মধ্যে মানসিক চাপ তেমন কিছুই ছিল না বরং তারা রীতিমতো স্বর্গে বাস করতো বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তাদের রক্তচাপ স্বাভাবিক ছিল এবং তারা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী ছিল।
সিজেল উপদেশ দেন, যাদের এমনিতেই ঘুম আসে এবং কমপক্ষে সাত ঘণ্টা স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুমাতে পারেন। এছাড়া যাদের দিনের বেলাতেও ঘুম পায়না তাদের ঘুম নিয়ে চিন্তা করার কোন দরকার নেই বা এর বেশি ঘুমানোরও প্রয়োজন নেই।