বন্যপ্রাণীদের অবৈধ বাণিজ্য, চোরাশিকার আর পাচারের বিরুদ্ধে গোটা বিশ্ব সম্মিলিতভাবে কাজ করে আসছে বহুদিন ধরেই। কিন্তু তারপরেও থামানো যাচ্ছে না এসব অবৈধ কর্মকাণ্ড। বিভিন্ন দেশের সরকার প্রধানরা সম্প্রতি তাই এক আলোচনায় বসেছে বতসোয়ানায়।
বন্যপ্রাণীর অবৈধ চোরাকারবার আশঙ্কাজনক হারে দিনদিন বেড়েই চলছে। এর বর্তমানে পরিস্থিতি কী আর কীভাবে এর মোকাবেলা করা যায় এই বিষয়গুলো নিয়েই বতসোয়ানার কাসানে শহরে আলোচনায় বসেন সরকার প্রধানরা।
বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্য নিয়ে আন্তঃদেশীয় এই কনফারেন্স '২০১৪ লন্ডন ঘোষণা' বাস্তবায়ন করবে। মোট ৪১টি দেশ এতে স্বাক্ষর করেছে। তারা বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্যকে দুর্নীতি আর সংঘবদ্ধ অপরাধ বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রতিরোধ করার জন্য সর্বাত্মকভাবে কাজ করবেন বলে অঙ্গীকার করেছেন।
সারা বিশ্বে প্রতিবছর হাজার হাজার প্রাণী হত্যা করা হচ্ছে তাদের চামড়া, শিং আর মূল্যবান অঙ্গের জন্য।
International Fund for Animal Welfare (IFAW) জানায়, ২০১৩ সালে থেকে ২০১৪ সালে শুধুমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকায় গণ্ডার হত্যা বেড়েছে ২১ শতাংশ। দশ হাজারের বেশি হাতি মারা হয়েছে তাদের মূল্যবান দাঁতের জন্য।
IFAW জার্মানির একজন ক্যাম্পেইনার রবার্ট ক্লেস বলেন, প্রাণী চোরাচালান বর্তমানে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়িয়েছে। গত ১৫ মাসে কমপক্ষে ১ ডজন সরকার এই অবৈধ বাণিজ্য বন্ধে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু প্রতিশ্রুতিই শেষ কথা নয়, আমাদের কাজে নামতে হবে।
কম্বোডিয়ারসহ বেশ কয়েকটি দেশ বন্যপ্রাণী চোরাচালানের কেন্দ্রে আছে। এখানে থেকে বেশিরভাগ জিনিসই চীনে পাচার করা হয়। আমেরিকান সংস্থা ‘Wildlife Alliance’ কম্বোডিয়ার পুলিশ এবং বন কর্মকর্তাদের সাথে একত্রিত হয়ে এদের বিরুদ্ধে কাজ করছে।
ওয়াইল্ডলাইফ অ্যালায়েন্সের অধীনে কম্বোডিয়ার ‘ফনম তামাও ওয়াইল্ডলাইফ স্যাংচুয়ারি’তে প্রায় ১২০০ বন্যপ্রাণী বাস করে। এখানে কুমির, ভল্লুক, হাতি আর বাঘ বেশ স্বাচ্ছন্দে ঘুরে বেড়ায়।
IFAW জানায়, যদি কঠোরভাবে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয় তবে তা অবশ্যই ভালো ফলাফল বয়ে আনবে। এর প্রমাণ হলো ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে ভারতে বাঘের সংখ্যা ১ হাজার ৭০৬টি থেকে বেড়ে ২ হাজার ২২৬টিতে দাঁড়িয়েছে।