ভিটামিনের যত কথা
জোবায়ের আহমেদ
ঠিকমতো খাবার না খাওয়ার জন্য মায়ের কাছে বকুনি খাওনা, এমন কেউ হয়তো তোমাদের মাঝে নেই। সকালে নাস্তার টেবিলে ফল, দুপুরে খাওয়ার সময় সবজি, আবার রাতে ঘুমানোর আগে দুধ, এসব নিয়ে অনেকেই হয়তো দুষ্টুমি করো। সত্যি কথা বলতে কি, ছেলেবেলায় সবাই এমনটা করে, কিন্তু মা যে কেন খাবার নিয়ে এতো জোর করেন তার কারণ যদি তোমরা জানো, তাহলে আর দুষ্টুমি করতে ইচ্ছে হবে না।
সুষম খাবারের মাধ্যমে আমাদের শরীর ভিটামিন আহরণ করে। ভিটামিন কী তা হয়তো তোমরা সবাই জানো। কিন্তু কোন ভিটামিন কি কাজ করে, আর কোন খাবারে পাওয়া যায় তা হয়তো অনেকের অজানা।
ভিটামিন হল খাবারের এক ধরণের উপাদান যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। খাবারে ৬ ধরণের ভিটামিন পাওয়া যায়। ভিটামিন এ, বি, সি, ডি, ই এবং কে।
ভিটামিন এ চোখের জন্য প্র্য়োজন । এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়। দুধ, মাখন, মিষ্টি আলু, কুমড়া, গাজর, সবুজ শাক, পনির, ফুলকপি ইত্যাদি খাবারে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
ভিটামিন বি-এর অভাবে বেশ কয়েকটি রোগ হতে পারে। এদের মধ্যে বেরিবেরি, ওয়ের্নিক-কোরসেকফ সিনড্রোম এবং মস্তিষ্কজনিত রোগ প্রধান। টমেটো, গাজর, বাদাম, মাশরুম, কলা, মাংস, বাদামী চাল, আলু ও ডিমে ভিটামিন বি পাওয়া যায়।
ভিটামিন সি-এর অভাবে মুখের ভেতর ঘা সহ মাড়িপ্রদাহ ও অন্যান্য রোগ হয়। টক ফল ও শাক-সবজিতে ভিটামিন সি থাকে।
শরীরে ভিটামিন ডি-এর পরিমাণ কমে গেলে রিকেটস রোগ হয়। মাছ, মাশরুম ও গরুর মাংসে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এছাড়া সূর্যের আলো থেকে আমাদের ত্বকে ভিটামিন ডি তৈরি হয়।
ভিটামিন ই-এর অভাব ছোট বাচ্চাদের দুর্বল করে তোলে ও অন্যান্য রোগকে আমন্ত্রণ জানায়। বাদাম, ডিম, দুধ, ও সবুজ শাকে ভিটামিন ই পাওয়া যায়।
ভিটামিন কে-এর পরিমাণ কমে গেলে শরীরের ক্ষতস্থান থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হয়না। অর্থাৎ, কোথাও কেটে গিয়ে রক্ত পড়তে থাকলে ভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। বিভিন্ন ধরণের শাক ও সবজিতে ভিটামিন কে পাওয়া যায়।
তাহলে দেখলে তো তোমরা যে ভিটামিন শরীরের জন্য কতটা দরকারী। আর এই ভিটামিন পেতে হলে ঠিকমত শাকসবজি ও অন্যান্য পুষ্টিকর খাবার নিয়মিত খেতে হবে।