বেয়ার গ্রিলস বা চার্লি বুরম্যান এর মত অনেক দুঃসাহসিক মানুষের মুখ টিভিতে প্রায়ই দেখি আমরা। লোমহর্ষক সব অভিযান করে দর্শকদের দম বন্ধ করে দিতে সক্ষম তাঁদের এক একটি অভিযান।
দুর্গম এসব অভিযানে অনেক প্রয়োজনীয় জিনিস সাথে রাখতে হয়, তবে সবচেয়ে যে জিনিসটি দরকার তা হলো ক্যামেরা যা না থাকলে এরকম দুর্গম এলাকার স্থিরচিত্র কিংবা ভিডিও ধারন সম্ভব হতো না।
আর এই ক্যামেরা যদি দুঃসাহসিক অভিযাত্রীদের শরীরের সাথে যুক্ত থেকে অভিযানের দৃশ্য ধারণ করে তাহলে কেমন হয় বল তো !
হ্যাঁ, এইরকম বাস্তবধর্মী ভিডিও বা দৃশ্য যেন অভিযাত্রী নিজেই ধারণ করতে পারে তার জন্য মার্কিন কোম্পানি GoPro নিয়ে এসেছে একটি ক্যামেরা যা বর্তমানে GoPro ক্যামেরা নামেই বহুল পরিচিত।
GoPro কোম্পানি High Definition Action Camera প্রস্তুত ও বাজারজাত করে থাকে। ২০০৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের San Diego এর একটি অ্যাকশন স্পোর্টস ট্রেড শো তে GoPro তাদের প্রথম ক্যামেরা GoPro 35 mm Hero চালু করে। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে Digital Hero নামের আরেকটি ক্যামেরা তারা বাজারে আনে। এই ক্যামেরার প্রধান আকর্ষণ ছিল ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ধারণ করা। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ১২ই মে বাজারে আসে Go Pro Hero 4।
সার্ফিং, স্কেটিং কিংবা সাইক্লিং এর মত খেলাতে খেলোয়াড়দের হেলমেটের সাথে যুক্ত থাকে GoPro ক্যামেরা। লর্ডস স্টেডিয়ামের ২০০ বছর পূর্তিতে আয়োজিত একটি ক্রিকেট ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডাম গিলক্রিস্ট প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এই ক্যামেরা ব্যবহার করেন। এরপর থেকে ক্রিকেটেও এই ক্যামেরার ব্যবহার শুরু হয়। এখনকার সময়ে বিগ ব্যাশ বা আইপিএলের খেলায় আম্পায়ারদের টুপির সাথে এই ক্যামেরা যুক্ত থাকে। এই ক্যামেরার মাধ্যমে মাঠের একটি বাস্তবসম্মত অনুলিপি পাওয়া যায়।
শুধু যে খেলার সময় হেলমেটের সাথে এটি লাগানো হয় তা কিন্তু নয়। স্কাই ডাইভিং এর সময় কোনো ডাইভার তার বুকের বেল্টের সাথে ক্যামেরাটি যুক্ত করে দেন, এতে করে তার অ্যাকশনের ৩৬০ডিগ্রী ভিউ পাওয়া সম্ভব হয়। স্কাই ডাইভিং ছাড়াও কেউ যদি অতল সাগরে ভিডিও ধারণ করতে চাই, তাও সে পারবে এই ক্যামেরার মাধ্যমে। তাই বুঝাই যাচ্ছে এই ক্যামেরা ওয়াটারপ্রুফও বটে !
সার্ফিং এর সময় সার্ফিং বোর্ডে ক্যামেরা সেট করে একজন সার্ফার সহজেই তার ভিডিও বা স্থিরচিত্র ধারণ করতে পারবে এই ক্যামেরার সহায়তায়।
এছাড়া, বাইরের দেশগুলোতে গাড়ির ড্রাইভারের সিটের পাশে এই ক্যামেরা যুক্ত করা থাকে, এতে করে গাড়ির সামনের রাস্তায় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে ফুটেজ দেখে অপরাধী শনাক্ত করার পাশাপাশি জনসচেতনতা সৃষ্টির কাজে ভিডিওটি ব্যবহার করা হয়।
অনেকে শখ করে পোষা কুকুরের গলায় ছোট্ট আকারের একটি GoPro ক্যামেরা ঝুলিয়ে দেয়, এতে করে কুকুরের সারাদিনের গতিবিধি পর্যবেক্ষন করা সম্ভব হয়।