ভারতের আসাম রাজ্যে অবৈধভাবে প্রচুর গণ্ডার শিকার করা হচ্ছে তাদের মূল্যবান শিঙের জন্য। তাই এদের রক্ষা করার জন্য নেয়া হয়েছে নতুন এক অভিনব পদ্দক্ষেপ। এবার গণ্ডারের মল থেকে তৈরি হবে 'কাগজ'।
ভারতের মহেশ বোরা একজন কয়লা খনি প্রকৌশলী। এ কাজ থেকে অবসর নেয়ার পর তিনি এই বিষয়েই পরামর্শক হিসেবে কাজ শুরু করেন, যদিও সেটি তার খুব একটা পছন্দ ছিল না। তিনি নতুন এবং উদ্ভাবনী কিছু করতে চেয়েছিলেন।
ঠিক এ সময় তিনি পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারেন রাজস্থানে হাতির মল থেকে তৈরি করা হচ্ছে কাগজ। তিনি অবাক হয়ে যান, কেননা রাজস্থানে হাতির সংখ্যা খুব অল্প, শুধুমাত্র পর্যটকদের ঘোরানোর কাজেই সেগুলো ব্যবহার করা হয়। অথচ ভারতের উত্তরের রাজ্য আসামের জঙ্গলে প্রায় ৮ হাজার বন্য হাতির বাস।
বিষয়টা নিয়ে বোরা একটু পড়াশোনা শুরু করেন। জানতে পারেন, হাতি যে ঘাস খায় তার বেশিরভাগ আঁশই তারা মলের মাধ্যমে নিঃসরণ করে দেয়। আর তা থেকে তৈরি করা হয় উন্নতমানের কাগজ। তার পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানতেন যে, হাতি আর গণ্ডারের হজম প্রক্রিয়া অনেকটা একই। তাই হাতির মল থেকে কাগজ তৈরি সম্ভব হলে, গণ্ডারের মল থেকেও সেটা করা যাবে। আর এখান থেকেই তার মাথায় নতুন এক ব্যবসা পরিকল্পনার উদ্ভব হয়।
এরপর তিনি রাজস্থানে যান। সেখানে কীভাবে হাতির মল থেকে কাগজ তৈরি করা হয় তা পর্যবেক্ষণ করেন। গৌহাটি চিড়িয়াখানায় গিয়ে তিনি হাতি আর গণ্ডারের মল সংগ্রহ করেন। নিয়ে আসেন এবং তা থেকে উৎকৃষ্টমানের কাগজ তৈরি করতে সক্ষম হন। এভাবেই সূচনা হয় ‘এলরাইনো ইকো ইন্ডাস্ট্রি’।
ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বোরা বড় পরিসরে তার এই কারখানা চালু করেন এবং তাতে তিনি ব্যাপক সাফল্য পান। বর্তমানে তার কারখানায় প্রতিমাসে ১.৩ টন কাগজ উৎপন্ন হয় হাতি এবং গণ্ডারের মল থেকে। এইভাবে উৎপাদিত প্রতি এক টন কাগজের জন্য ২৭টি গাছ রক্ষা পায়।