আপনাকে যদি কেউ জিজ্ঞেস করে এখন কয়টা বাজে? মুহুর্তেই আপনি আপনার হাতের ঘড়ি বা মোবাইলের ঘড়ি দেখে সময় বলে দেন। কিন্তু যখন ঘড়ি ছিল না !! তখন মানুষের কি সময় জানার প্রয়োজন ছিল না? তখনও মানুষ সঠিক সময়ই জানত তবে আজকের দিনের ঘড়ি দিয়ে নয়; সানডায়েল বা সূর্যঘড়ি দিয়ে।
সূর্যঘড়ি এমন একটি মাধ্যম বা ডিভাইস যা আকাশে সূর্যের অবস্থানের উপর ভিত্তি করে দিনের সময় বলে দিতে পারে।
প্রত্নতাত্ত্বিক রেকর্ড থেকে জানা যায় বিশ্বের প্রাচীনতম সূর্যঘড়ি হল ওবেলিস্কস (৩৫০০ অব্দে) এবং শেডো ক্লক বা ছায়া ঘড়ি (১৫০০ অব্দে) যা প্রাচীন মিশরীয় জ্যোতির্বিদ্যা ও ব্যাবিলনীয় জ্যোতির্বিদ্যার হাত ধরে এসেছে। সপ্তম শতক থেকে চতুর্দশ শতক পর্যন্ত ধর্মীয় যাজকেরা এই ধরণের সূর্যঘড়ি ব্যবহার করতেন।
ইতালিয়ান জ্যোতির্বিদ জিওভান্নি পেডোভানি ১৫৭০ সালে তার একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন যেখানে সূর্যঘড়ির গঠন ও কার্যপ্রণালী নিয়ে আলোচনা করেন। তখন ঐ সময়ে জ্যোতির্বিদরা বিভিন্ন ধরনের সূর্যঘড়ি তৈরি করেছেন। উলম্ব, অনুভূমিক এবং রিং টাইপ সূর্যঘড়ি এদের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য।
সূর্যঘড়িতে সাধারণ ঘড়ির মতোই ডায়াল থাকে। আমরা জানি, সূর্য পূর্বদিকে উঠে এবং পশ্চিম দিকে অস্ত যায়। সূর্যঘড়িকে সূর্যের আলোতে এমনভাবে রাখা হয় যাতে এর পয়েন্টার বা নির্দেশক উত্তর দিকে মুখ করে থাকে ফলে পূর্ব-পশ্চিমে ঘড়ির ডায়ালগ অবস্থান করে। সূর্যঘড়ির কেন্দ্রে একটি উলম্ব সরু পাত থাকে যা ঘড়ির কাটার ন্যায় কাজ করে। যখন সূর্যের আলো পাতের উপর পড়ে তখন উলম্ব পাতের ছায়া ডায়ালগের উপর এসে পড়ে। আর ডায়ালগের উপর ছায়ার অবস্থান দেখেই বলা যায় দিনের সময় কত বা কয়টা বাজে।
রাতের বেলা সূর্য থাকে না বলে সূর্যঘড়ি রাতে সময় বলে দিতে পারেনা। তাই, রাতে আকাশের তারার অবস্থান দেখেই সময় নির্ণয় করতেন আদিকালের প্রত্নতাত্ত্বিকগণ বা জ্যোতির্বিদরা।