শৈবালের মৃত্যু আমাদের জন্য অশনি সংকেত

প্রবাল প্রাচীর পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত বাস্তুতন্ত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। কিন্তু যদি আমরা যথাযথভাবে এগুলো সংরক্ষণ সংরক্ষণ না করি তাহলে এই শতাব্দীর মধ্যেই হারিয়ে যেতে পারে অনন্যসুন্দর এই জীব।

বাস্তুবিদ্যা-বিশেষজ্ঞ পিটার সেল শৈবালের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বলেন, ‘প্রবাল প্রাচীরের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে। আমিসহ অনেক কোরাল বিশেষজ্ঞ এ ব্যাপারে অনেকদিন ধরেই বলে আসছি। যদি প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য আসন্ন COP21 সম্মেলন আশাতীতভাবে সফল হয় এবং এই শতকে তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রির মধ্যে রাখা হয় তারপরও সেটা শৈবালের জন্য খুব একটা ভালো দিক বয়ে আনবে না।

তাপমাত্রার এই বৃদ্ধি শৈবালদের জন্য অতিরিক্ত হয়ে যাবে এবং এই শতকের মধ্যেই এদের অধিকাংশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। যদি সত্যি সত্যিই শৈবাল আমরা বাঁচাতে চাই তাহলে ১ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রা কোনভাবেই বাড়তে দেয়া যাবেনা।

আমাদের বায়ুমণ্ডলে যে কার্বনডাইঅক্সাইড নিঃসৃত হয় তার একটা বড় অংশ গিয়ে সমুদ্রের পানির সাথে মেশে এবং অ্যাসিডিফিকেশন সৃষ্টি করে। এর ফলে শৈবালের দেহে অবস্থিত ছোট ছোট উদ্ভিদগুলো মারা যায় এবং শৈবাল সাদা হয়ে যায়। এঁকে বলা হয় ব্লিচিং। এই অবস্থা ২ থেকে ৩ সপ্তাহ চললে মারা যায় শৈবাল।

যদিও শৈবালের দেহের উদ্ভিদগুলোর মৃত্যু এবং জন্ম একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু অ্যাসিডিফিকেশনের কারণে সমুদ্রের পানির পিএইচ মাত্রা বেড়ে যায় বলে এসব উদ্ভিদ ভালোমতো জন্মাতে পারে না। এতে শৈবালের উৎপাদন হার কমে যাচ্ছে।

সেই সাথে শৈবালের মৃত্যুর ফলে এদের উপরে নির্ভরশীল অনেক মাছও মারা যাবে, এমনকি বিলুপ্তও হয়ে যেতে পারে। শুধু তাই নয়, শৈবালের ওপর যেসব মানুষের জীবিকা নির্ভর করে তাদের জীবনযাত্রাও হুমকির মুখে পড়বে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন