খুব ছোট আয়তনের হওয়া সত্ত্বেও প্লুটো গ্রহ অবিশ্বাস্য সব বৈচিত্র্যে ভরপুর। ভাসমান বিশাল সব বরফখণ্ড, ঘোলা আকাশ, বৈচিত্র্যপূর্ণ পাহাড়-পর্বত এমন সব বৈশিষ্ট্য রয়েছে প্লুটোর।
এবার নিউ হরাইজন মিশনের বিজ্ঞানীরা বলছেন তারা বামন গ্রহ নামে খ্যাত এই গ্রহটির কিছু আজব বৈশিষ্ট্য আবিষ্কার করেছেন যেগুলোর মধ্যে রয়েছে বরফের আগ্নেয়গিরি, ভাসমান পর্বত আর অদ্ভুত আচরণকারী চাঁদ।
গত জুলাই মাসে প্লুটোকে অতিক্রম করে নিউ হরাইজন স্পেসক্রাফট। সে সময়ের কিছু পর্যবেক্ষণ বিজ্ঞনীরা তুলে ধরেন সোমবার Division for Planetary Sciences -এর বার্ষিক আলোচনা সভায়। তারা তথ্য দেখিয়ে বলেন, আসলে প্লুটোকে আমরা যা ভেবেছিলাম মোটেও সেরকম নয়। সম্প্রতি আবিষ্কৃত প্লুটোর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখে আমরা দ্বিধান্বিত হয়ে পড়ছি।
বরফের আগ্নেয়গিরি
প্লুটোর দক্ষিণ মেরুতে দুটি পর্বতের চূড়ায় গর্ত আবিষ্কার করা হয়েছে। পর্বত দুটি হচ্ছে রাইট মনস আর পিকার্ড মনস। দুটি পর্বতই বরফে ঢাকা। দুটির উচ্চতায় কয়েক কিলোমিটার আর চওড়ায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার। মজার ব্যাপার হচ্ছে, উত্তপ্ত লাভার বদলে এই দুই পর্বত থেকে নির্গত হবে বরফ যেগুলো নাইট্রোজেন আর কার্বন মনোঅক্সাইড সমৃদ্ধ।
তবে এগুলো আসলেই কোন আগ্নেয়গিরি কিনা সে ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি বিজ্ঞানীরা। তবে যদি তা হয়, তাহলে এটাই হবে সৌরজগতের বাইরে আবিষ্কৃত কোন আগ্নেয়গিরি।
ভাসমান পর্বত
প্লুটোর বুকে যে পর্বতগুলো রয়েছে সেগুলো অনেকটা আমাদের পৃথিবীর বিশাল বিশাল বরফখন্ডের মত। এই বরফখন্ডগুলো আবার নাইট্রোজেনের ‘সমুদ্রের’ উপর ভাসতে থাকতে। এগুলো আকারে সত্যিই বিশাল হয়ে থাকে। এমনকি প্লুটোর সবচেয়ে বড় যে পর্বতটি আছে সেটিও ভাসমান।
অস্বাভাবিক চাঁদ
প্লুটোর ৪টি ছোট ছোট চাঁদ আবিষ্কৃত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে নিক্স, স্টিক্স, কার্বেরস এবং হাইড্রা। এই চাঁদগুলোর মধ্যে বিজ্ঞানীরা কিছু অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য খুঁজে পেয়েছেন। যেমন কার্বেরস ও হাইড্রাকে দেখে মনে হচ্ছে এরা আসলে দুটি বস্তুর সমন্বয়ে তৈরি হয়েছে।
কোন একসময়ে এই দুটি বস্তু পরস্পরের সাথে সংঘর্ষের মাধ্যমে একসাথে জোড়া লেগে গিয়ে হাঁসের ঠোঁটের মত একটা আকৃতি তৈরি করেছে। আবার এই ছোট ছোট চাঁদগুলো নিজ অক্ষের উপর অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে আবর্তিত হয়। যেমন হাইড্রার নিজ অক্ষের উপর আবর্তন করতে সময় লাগে মাত্র ১০ ঘণ্টা।