কোন শব্দ কতোটা ক্ষতিকর

অযথা শব্দ বা উচ্চস্বরে আওয়াজ আমাদের প্রচণ্ড বিরক্ত করে। কিন্তু বিরক্তির চেয়ে বড় সমস্যা এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। অতিরিক্ত শব্দের কারণে আমাদের মধ্যে মানসিক চাপ, ঘুম না আসা, কোন কাজে মনোযোগ দিতে না পারা ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।

এসব সমস্যা দূরীকরণে গত ২০ বছর ধরে এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখ পালন করা হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক শব্দদূষণ সচেতনতা দিবস’।
দৈনন্দিন জীবনে আমরা কীভাবে শব্দদূষণের শিকার হচ্ছি সে সম্বন্ধে চলুন জেনে নিই।

নীচু স্বরে কথা বলা বা ফিসফিস
এটা সবচেয়ে কম তীব্রতার শব্দ। সাধারণত ৩০-৪০ ডেসিবেলের বেশি হয় না ফিসফিসানি। তবে এটাও আপনার রাতের ঘুমের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

অফিসের শব্দ
অফিসে সারাদিনই চলতে থাকে কাজ আর সেই সাথে চলে কথা। কম্পিউটারে টাইপিঙের শব্দ, সহকর্মীদের কথা আপনার জন্য শব্দদূষণের কারণ হতে পারে। নষ্ট করতে পারে আপনার মনোযোগ, ব্যাঘাত ঘটাতে পারে আপনার কাজে। মাত্র ১ মিটার দূরে কোন আলোচনা চলতে থাকলে তা আপনার কানে ৬০ ডেসিবেল শব্দ তৈরি করে যা আপনার কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে যথেষ্ট।

গাড়ির শব্দ
রাস্তায় গাড়ি চলার শব্দ প্রচণ্ড মাত্রার দূষণ সৃষ্টির জন্য দায়ী। রাস্তাঘাটে গাড়ির শব্দ ৮০ ডেসিবেল মাত্রার শব্দদূষণ সৃষ্টি করে। এটা শুধু আমাদের জন্য বিরক্তিকরই নয়, আমাদের কানের জন্য ক্ষতিকর এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

স্থাপনা নির্মাণের শব্দ
নির্মাণাধীন ভবন বা স্থাপনা উচ্চমাত্রার শব্দ সৃষ্টির জন্য দায়ী। ইটভাঙার শব্দ, বড় বড় হাতুড়ি আর ঢালাই মিশ্রণ তৈরির মেশিনের শব্দ আমাদের কান ঝালাপালা করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। এসব শব্দ ১০০ ডেসিবেল পর্যন্ত হয়ে থাকে। যারা বহুদিন এসব জায়গায় কাজ করেন তাদের শ্রবণশক্তি অনেকাংশে কমে যায়।

ভুভুজেলা
২০১০ সালে আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত ফুটবল বিশ্বকাপে এক অভিনব বাদ্যের সূচনা হয়, যার নাম ভুভুজেলা। মূলত নিজ দলের খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করতেই লম্বা বাশির মতাে এই বাঁশিটি বাজাতো তারা।

কিন্তু একসাথে হাজার হাজার ভুভুজেলা প্রচণ্ডহারে শব্দদূষণ করে যার মাত্রা ১২০ ডেসিবেল পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত স্টেডিয়ামে ভুভুজেলা নিষিদ্ধ করা হয়। তবে ইদানিং আমাদের দেশে বিভিন্ন উৎসবে ভুভুজেলার ব্যবহার দেখা যাচ্ছে।

উড়োজাহাজ
উড্ডয়নের সময় একটি উড়োজাহাজ অতিরিক্ত শব্দ উৎপন্ন করে। ৪০ মিটার দূর থেকেও এই শব্দের তীব্রতা ১৪০ ডেসিবেল হতে পারে যা আপনাকে কিছুক্ষণের জন্য বধিরও করে দিতে পারে।

আগ্নেয়াস্ত্রের শব্দ
গুলি গায়ে লাগলেই যে শুধু আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শুধু তাই নয়, গুলির শব্দও আপনার শ্রবণশক্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। অস্ত্রের ওপর ভিত্তি করে গুলির শব্দ ১৩০ থেকে ১৬০ ডেসিবেল পর্যন্ত হতে পারে। যা আপনার শ্রবণ ইন্দ্রিয়ের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন