চ্যালেঞ্জের মুখে পৃথিবী

ইংরেজি মুভিতে আমরা পৃথিবীকে নানা ভাবে ধ্বংস হতে দেখি। Independence Day, The Day After Tomorrow, Volcano, Earthquake, Nature Unleashed: Earthquake, Disaster Zone: Volcano in New York, এবং Absolute Zero অন্যতম ।

কখনো বিশাল কোনো বন্যা, আবার কখনো কোনো ভিনগ্রহের প্রাণীদের আক্রমন, আবার কখনো বা পৃথিবীর ঘূর্ণন থেমে গিয়ে পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেতে দেখি আমরা।

কিন্তু আসলেই যে আমাদের পৃথিবী খুব দ্রুত ধ্বংসের দিকে চলে যাচ্ছে, আমরা সেটি হয়তো বুঝতেও পারছি না।

কিছু নির্দিষ্ট কারণে আমাদের অস্তিত্ব আজ প্রায় অনেকটাই হুমকির মুখে !!  

এরকম কিছু কারণ আজ তোমাদের সামনে তুলে ধরছি :  

GLOBAL WARMING বা বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ  :

একটু লক্ষ্য করলে এর ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে যেমন ৫ বছর আগেও গ্রীষ্মকালে বাংলাদেশে গড়ে ২৭-২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা ছিলো, যা এখন ৩৪-৩৫ এ গিয়ে দাঁড়িয়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ২০২৫ কিংবা ২০৩০ এ তাপমাত্রা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে। এ কারণে খরার মত ভয়াবহ দুর্যোগ হবার প্রকট সম্ভাবনাও রয়েছে সামনে।

আর দুই মেরুর অর্থাৎ উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরুর কথা যদি আমরা চিন্তা করি তাহলে দেখা যাবে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে দুই মেরুর বরফগুলো আস্তে আস্তে গলে যাচ্ছে যা সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়িয়ে দিচ্ছে। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি নিচু দেশগুলোর জন্যে একটি অশনি সংকেত ।

গ্রহাণুর আঘাতঃ

মহাকাশে অসংখ্য গ্রহানু এবং বিভিন্ন আকারের জ্যোতিষ্ক ক্রমাগত ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর যেকোনো একটির আঘাতে মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে পৃথিবী।

বলা হয়ে থাকে, হাজার হাজার বছর আগে বিশাল এক উল্কাপিন্ডের আঘাতে পৃথিবীর সকল প্রাণীকূল ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো। এমনকি ডাইনোসর এর মত অতিকায় প্রজাতিও ধ্বংস হয়ে গিয়েছিলো এই আঘাতে। তাই, আবার এরকম হবে না, সেটা আমরা কেউই বলতে পারি না।

 

প্যানডেমিক বা মহামারি রোগঃ

প্রতি বছরই আমরা নতুন নতুন রোগের নাম জানছি। কিছুদিন আগে আফ্রিকায় Ebola নামক মহামারি রোগ কেড়ে নিয়েছে হাজারো মানুষের প্রাণ। SARS, MERS, Bird Flu, Swine Flue প্রতিটি রোগই হাজার হাজার প্রাণহানি করেছে ইতিমধ্যে। এই রোগগুলো আগেরদিনে কলেরা কিংবা প্লেগের মত এতটা ভয়াবহ আকার যদি ধারণ করে, তাহলে আমাদের অস্তিত্ব হয়তো একেবারেই শেষ হয়ে যেতে পারে।

পারমানবিক যুদ্ধঃ

বর্তমানে পৃথিবীর প্রথম সারির দেশগুলো অর্থাৎ উন্নত দেশগুলো নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগীতা করে। কথিত বিশ্ব  শান্তির জন্যে উন্নত দেশগুলো পারমানবিক অস্ত্র বাড়াচ্ছে যা এক প্রকার হুমকি মানবজাতির জন্যে। শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে পারমানবিক অস্ত্রের ব্যাবহারে হয়তো একদিন শান্তি আসবে, কিন্তু ঐ শান্তি ভোগ করার জন্যে তখন আর মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না।

জনসংখ্যা বিস্ফোরণঃ

পৃথিবীর জনসংখ্যা যে হারে বাড়ছে তাতে করে একসময় এতো মানুষের চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে শেষ হয়ে যেতে পারে এই পৃথিবী। আশা করা হচ্ছে, প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে, কিন্তু যদি সমাধান না হয়??

রোবটঃ

এই বিষয়টা যথেষ্ট কাল্পনিক হলেও, আমরা অগ্রাহ্য করতে পারিনা এটিকে।

আজ থেকে ১০০বছর আগে কেউ রোবটের কথা চিন্তা করেনি। কেউ কখনো ভাবেনি শুধুমাত্র কোনো যন্ত্র দিয়ে মানুষের মত কাজ করানো যাবে। উপকারী রোবট বানানো যেমন সম্ভব, ক্ষতিকর রোবট ও বানানো সম্ভব।

বিজ্ঞানে "সিঙ্গুলারিটি" নামক একটি কথা আছে যেখানে বলা হয়েছে এক সময় মানুষের চেয়ে রোবটের বুদ্ধিমত্তা বেশি হবে। আর তখন কি ধরনের সমস্যা হতে পারে, তা সহজেই অনুমান করা যাচ্ছে।

খুব সহজ ভাবে যদি বলি, ১৯১৫ সালে কেউ ভাবেনি ২০১৫ সালে এতো উন্নত প্রযুক্তি আসবে, এতদূর এগিয়ে যাবে, তখন হয়তো কল্পনা ও করেনি কেউ। তেমনি আমরা হয়তো কল্পনা ও করতে পারছি না ২১১৫ সালে কতদূর যাবে আমাদের প্রযুক্তি !!  

এখন যেমন ল্যাবরেটরি তে বানানো হচ্ছে রোবট, তখন হয়তো রোবটদের গবেষণাগারে তৈরী করা হবে  কৃত্রিম "মানুষ"।

 

 

 

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন