দুশ্চিন্তায় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা

৩.৮ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এক অস্বাভাবিক উজ্জ্বল আলো বিস্মিত করেছে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের। তবে এটি আদৌ সুপারনোভা নাকি তার চেয়ে বড় কিছু তা নিয়ে এখনো সন্দিহান তারা। নাসার বিশেষ হাবল স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে এর সঠিক উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা।

এরকম সুপার সুপারনোভার দৃষ্টান্ত এই প্রথম। বিজ্ঞানীরা এটির নাম দিয়েছেন ASASSN-15lh । দূরত্ব আর উজ্জ্বলতা উভয় ক্ষেত্রেই এটি এখন পর্যন্ত একমাত্র আবিষ্কার। আমাদের সমগ্র মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সি থেকে কমপক্ষে ২০-৫০ গুন বেশি উজ্জ্বল এই সুপারনোভা। ক্রমবর্ধমান এই সুপারনোভা অন্যান্য আবিষ্কৃত সুপারনোভার চাইতে দ্বিগুণ উজ্জ্বল।

তবে একসময় এটি আমাদের সূর্য থেকে সর্বোচ্চ ৫৭০ গুন বেশি উজ্জ্বল ছিল। কিন্তু ৩.৮ বিলিয়ন আলোকবর্ষ অতিক্রম করে আসায় এই আলো দেখতে আমাদের আর সানগ্লাস পরার প্রয়োজন পড়ে না।

যখন সাধারণ মানুষ ভাবছে, ‘কোন বস্তু কীভাবে এতো উজ্জ্বল হয়’ তখন বিজ্ঞানীরা ভাবছেন, ‘এটি কোথা থেকে এতো শক্তি পেল?’

যদিও ৭ মাস আগে চীন এবং আমেরিকার একদল গবেষক এই উজ্জ্বল আলোটির সন্ধান পান তবে সেটির খবর বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে ‘সায়েন্স’ বিজ্ঞান পত্রিকায়।

এই প্রকাশনার প্রধান লেখক সুবো ডং এই আবিষ্কারের পর সারারাত ঘুমাতে পারেননি। তার সহকর্মী বেঞ্জামিন শ্যাপি প্রথমে এটি বিশ্বাসই করতে পারেননি। তার কাছে এটি মনে হয়েছিল ‘অবাস্তব’। তিনি বলেন, ‘এই ধরণের আবিষ্কার করার জন্যই আমি একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী। আমি জানি প্রকৃতি আমাকে এমন কিছু দিবে যা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি’।

এরপর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই আলোর শক্তির উৎস খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন হাবল টেলিস্কোপের সাহায্যে। নতুন কোন ধারণা বা আবিষ্কারের গন্ধ পাচ্ছেন তারা। বিজ্ঞানীদের এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত থিওরিগুলো এই সুপার সুপারনোভার কাছে হুমকির মধ্যে পড়ে গিয়েছে।

কোন কোন বিজ্ঞানীর মতে এটি কোন সুপারনোভাই নয় বরং ম্যাগনেটার নামে অতি দুর্লভ এক নক্ষত্র। এটি খুব দ্রুত পাক খায় এবং এর অস্বাভাবিক ক্ষমতাসম্পন্ন চৌম্বকক্ষেত্র থাকে। কেউ কেউ বলছেন, এটি একটি কৃষ্ণগহ্বরকে ঘিরে কোন অস্বাভাবিক আণবিক কর্মকাণ্ড। তবে এটি সত্যিই আসলে কি তা জানার জন্য আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন