নিরামিষভোজীদের দিবস আজ

আজ 'ওয়ার্ল্ড ভেগান ডে' (World Vegan Day)। দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে নভেম্বর মাসের ১ তারিখে পালিত হয়ে আসা এই দিনটি মূলত সারাবিশ্বের সব নিরামিষভোজীদের জন্য এক বার্ষিক উদযাপন।

যুক্তরাজ্যে অবস্থিত 'দ্য ভেগান সোসাইটি'-র প্রেসিডেন্ট লুইস ওয়ালিস এই দিবসটির প্রবর্তন করেন ১৯৯৪ সালে। ভেগান সোসাইটির ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশ্যেই মূলত দিনটির প্রবর্তন হলেও পরবর্তীতে তা সারাবিশ্বের ভেজিটেরিয়ানদের জন্যই এক তাৎপর্যপূর্ণ দিনে পরিণত হয়।

তবে তার অনেক আগ থেকেই পহেলা অক্টোবর পালন করা হচ্ছে 'ওয়ার্ল্ড ভেজিটেরিয়ান ডে' বা 'বিশ্ব নিরামিষ দিবস'। নর্থ আমেরিকান ভেজিটেরিয়ান সোসাইটি ১৯৭৭ সাল থেকে অক্টোবরের ১ তারিখ 'ওয়ার্ল্ড ভেজিটেরিয়ান ডে' হিসেবে পালন করে আসছে। ওয়ার্ল্ড ভেজিটেরিয়ান ডে মূলত পুরো অক্টোবর মাস জুড়েই পালিত হয় নিরামিষ খাওয়ার ব্যাপারে মানুষকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে। এর কার্যক্রম শেষ নভেম্বরের ১ তারিখ 'ওয়ার্ল্ড ভেগান ডে'-তে এসে।

উল্লেখ্য ভেজিটেরিয়ান বা নিরামিষভোজীরা মূলত স্বাস্থ্যগত কারণেই এ ধরণের খাবার গ্রহণ করে থাকেন। তবে অনেক সময় তারা ডিম-দুধও খেয়ে থাকেন। এ জন্য ভেজিটেরিয়ানদের বলা হয় থাকে স্বাস্থ্যসম্মত ডায়েট চার্টের অনুসারী।

অপরদিকে ভেগান (Vegan)-রা নিরামিষ ছাড়া আর অন্য কোন খাবারই গ্রহণ করেন না। এমনকি ডিম,দুধও না। তারা সকল প্রকার প্রাণীজ খাবার এড়িয়ে চলেন। এ জন্য এদের একটি পৃথক জীবন ব্যবস্থার মানুষ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়।

ভেগান দিবসের সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পায় তা হল ‘প্রাণী অধিকার’। অ্যানিমেল অ্যাডভোকেটরা এদিন স্ট্রিট স্টলের আয়োজন করেন। এছাড়া নিরামিষ ভোজের আয়োজন করা, গাছ লাগানোর মত বিভিন্ন সচেতনতামূলক কাজের মাধ্যমে দিবসটিকে পালন করেন।

এ দিবস উপলক্ষে বোস্টনে ‘বোস্টন ভেজিটেরিয়ান সোসাইটি’ আয়োজন করে সারাদিনব্যাপী ভেজিটেরিয়ান ফুড ফেস্টিভেলের। উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ বিনামূল্যে নিরামিষ খাবার।

অবশ্য অ্যাডিলেইডে দিবসটি পালন করা হয় নভেম্বরের প্রথম রোববারে। আর আয়ারল্যান্ডে তো পুরো নভেম্বর মাসকেই ঘোষণা করা হয়েছে 'ভেগান মান্থ’ হিসেবে। জার্মানির বিভিন্ন মেট্রোপলিটন শহরেও দিবসটি উপলক্ষে থাকে বিশেষ বিশেষ আয়োজন।
মেলবোর্নে একটু ব্যতিক্রম এখানে অক্টোবরের শেষ রোববার পালন করা হয় ভেজিটেরিয়ান ডে।

তবে নিউজিল্যান্ডের ‘ইনভেকারগিল ভেগান সোসাইটি’-র ভেগান ডের উদযাপন একটু ভিন্নধর্মী আর মজাদারও বটে। ২০১২ সালের ভেগান দিবসে এই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা মাংস ব্যবসায়ীদের টউফু(সোয়াবিন থেকে তৈরি একধরণের খাবার) উপহার দিয়েছিল। আর ২০১৩ সালে তারা মাংসের দোকানে যেয়ে সোয়ামিল্ক উপহার দেবার সাথে সাথে নিরামিষ খাবার রান্নার আয়োজনও করেছিল।

আসলে দিবসটি যেখানে যেভাবেই পালন করা হোক না কেন,পৃথিবীর সকল ভেজিটেরিয়ানরা তাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে একটা বিষয় নিয়েই তাদের কঠোর অবস্থান জানিয়ে যায় আর তা হল ‘প্রাণী অধিকার আদায় এবং প্রাণী হত্যা রোধ’।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন