পর্বতের চূড়ায় রান্না

বাড়িতে গ্যাসের চুলায় রান্নাবান্না কত সহজ! একটা ম্যাচের কাঠি জ্বালিয়ে চুলার চাবি ঘুরিয়ে গ্যাস চালু করে আগুন ধরালেই হল, রান্না করতে থাকুন যত খুশি। কিন্তু পৃথিবীর এমন কিছু জায়গা আছে, যেখানে আপনার কাছে যত ভালো চুলাই থাকুক না কেন, রান্না করতে আপনাকে বেশ বেগ পেতে হবে। যেমন, পর্বতের চূড়া। উঁচু পর্বতের চূড়ায় রান্না করা বেশ কঠিন, যত সাবধানেই রান্না করুন না কেন, খাবার সিদ্ধ হতেই চাইবে না।

আসলে এমনটা ঘটে উচ্চতার কারণে। আমরা জানি যে কোন পদার্থ যে তাপমাত্রায় ফুটতে শুরু করে, তাকে ঐ পদার্থের স্ফুটনাঙ্ক বলে। পানি ১০০° সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটতে থাকে, তাই এর স্ফুটনাঙ্ক ১০০° সেলসিয়াস। কিন্তু এই স্ফুটনাঙ্ক ভূপৃষ্ঠে/ মাটিতে এই তাপমাত্রায় পানি ফুটতে থাকে। মাটিতে বাতাসের চাপ অনেক বেশী, তাই পানি ফুটতে সময় নেয় বেশী এবং তাপও বেশী লাগে। কিন্তু ভূপৃষ্ঠ থেকে যতই উপরে ওঠা যাবে, বাতাসের চাপ ততই কমতে থাকবে। আর বাতাসের চাপ কমার ফলে পানির স্ফুটনাঙ্ক কমতে থাকে। যার ফলে রান্না করার সময়ে খাবার সিদ্ধ করার আগেই পানি ফুটতে শুরু করে বাষ্প হয়ে যায় এবং রান্না করা কঠিন হয়ে পড়ে।

এছাড়াও আমরা জানি যে আগুন জ্বলে অক্সিজেনের কারণে। বাতাসে যদি অক্সিজেন না থাকে তাহলে আগুন জ্বলবে না। পর্বতের চূড়ায় বাতাস বেশ পাতলা এবং অক্সিজেনও কম। যার ফলে আগুনের তাপও এতটা শক্তিশালী হয় না। এসব কারণে পর্বতের চূড়ায় রান্না করতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়।

তাহলে এর থেকে মুক্তি পাবার উপায় কি? উপায় অবশ্যই আছে, আর সেটাও বেশ সহজ। আমাদের প্রায় সবার বাসাতেই রান্না করার বিশেষ এক ধরণের পাত্র আছে, সেটা হল প্রেশার কুকার। প্রেশার কুকারে রান্না করার বেলায় বাইরের তাপমাত্রা বা বাতাসের চাপ তেমন প্রভাব ফেলে না। তাই এতে যেকোনো খাবার খুব সহজে এবং তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয়। অতএব, পর্বতের চূড়ায় প্রেশার কুকার দিয়ে রান্না করাই উত্তম।

নিচের টেবিলে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কত উচ্চতায় কত তাপমাত্রায় পানি ফুটে থাকে তা দেয়া হলঃ

 উচ্চতা (ফিট)

তাপমাত্রা (°সেলসিয়াস)

 ০

 ১০০

 ৫০০

 ৯৯.৫

 ১০০০

 ৯৯

 ২০০০

 ৯৮

 ৫০০০

 ৯৫

 ৬০০০

 ৯৪

 ৮০০০

 ৯১.৯

 ১০০০০

 ৮৯.৮

 ১২০০০

 ৮৭.৬

 ১৪০০০

 ৮৫.৫

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন