প্রশ্ন শুনে ভ্যাবাচ্যাকা সাদ !

আজ অমির জন্মদিন, তাই অমির তার বন্ধু সাদের সাথে Food Street এ বার্গার খেতে গেলো। সবাই খুব মজা করে বার্গার খাচ্ছে। 

“ বার্গারটা সত্যি খুব মজা, তাই না অমির। ”

“ হ্যাঁ রে সাদ। আচ্ছা বল তো পাউরুটিতে ছিদ্র থাকে কেন? ”

অমির প্রশ্ন শুনে সাদ খুব অবাক হলো। পাউরুটিতে ছিদ্র !

“ কোথায় ছিদ্ররে অমির? ”

“ আরে বোকা বার্গারের এক পিস পাউরুটি উল্টিয়ে দেখ না বাবা ”।

সত্যি তো পাউরুটির গায়ে ছোট ছোট ছিদ্র আছে। সাদ খুব লজ্জা পেলো।

“ ইস রে বাবা আগে তো কখনো খেয়ালই করি নি ব্যাপারটা ! ”

“ বল না অমির, পাউরুটিতে ছিদ্র কেন থাকে ? ”

“ একটু চেষ্টা কর, তুই ও বুঝতে পারবি কারণটা। ”

“ হেয়ালি রাখ তো, তুই এই ছিদ্রের রহস্য বলে দে এখন ”। একটু রেগেই সাদ কথাটা বললো।

“ বলছি,কিন্তু এর আগে তুই আমাকে বল যে পাউরুটি তৈরীতে আমরা কি ব্যবহার করি। ”

“ ইস্ট। ” বললো সাদ।“ এইটা তো জানি আমি,কিন্তু ছিদ্র.. ”। কথাটা শেষ হওয়ার আগেই সাদকে অমির থামিয়ে বললো,“ তুই এত্ত অস্থির কেন ,আমি বলবো তো। ”

“এই যে আমি চুপ করলাম,এখন বল তুই ”।

অমির বলা শুরু করলো, “ আমরা ইস্ট কেন ব্যবহার করি তুই জানিস? ”

“ হ্যাঁ পাউরুটি ফুলানোর জন্য।”

“ হয়েছে ”।

“ প্রথমে ময়দা দিয়ে পাউরুটির ময়ান তৈরী করা হয়,এরপর এর মধ্যে ইস্ট মিশনো হয় ” 

“ কিন্তু ময়দায় তো পানি থাকে,তাহলে ! ”

“ ঠিকই ধরেছিস তুই সাদ, ময়দা আর্দ্র ও উষ্ণ থাকে বলে ময়দায় মিশ্রিত ইস্ট থেকে এক প্রকার গ্যাস নিঃসৃত হয়। ”

“ আচ্ছা এর কারণে কি ময়দার ভেতরে ছোট ছোট বুদবুদ তৈরি হয়? ” অমিরকে জিজ্ঞাসা করলো সাদ।

“ হ্যাঁ, এই বুদবুদের জন্য ময়দার আয়তন বৃদ্ধি পায় ”।

“ তারপর এই বুদবুদগুলোর কি হয়? ”

“এরপর এই ময়দা যখন খণ্ড খণ্ড করে সেঁকা হয় তখন…”

“এক মিনিট,এক মিনিট”। অমিরকে থামালো সাদ।

“ বুঝলাম এখন, এই ময়দা যখন খণ্ড খণ্ড করে সেঁকা হয় তখন বুদবুদগুলো ফেটে গিয়ে পাউরুটির ভেতরে ছোট ছোট ছিদ্রের সৃষ্টি করে। ” 

“ কি রে অমির আমার কথা ঠিক ”। জয়ের হাসি হেসে বললো সাদ।

“ জি তুই ঠিক ”। অমিরও হাসলো।

“ কিন্তু অমির ইস্ট তাহলে কি পাউরুটির মধ্যে থাকে? ”প্রশ্ন করলো সাদ।

“ না,থাকে না। ”

“ ইস্ট কিভাবে নষ্ট হয় তাহলে? ”

“ওভেনে বেকিং করার সময় উত্তাপে ইস্ট মরে যায়। ” “ ফলে রুটির ফোলা বন্ধ হয় এবং রুটি ছিদ্র ছিদ্র হয়। ” উত্তর দিলো অমির।

“ আচ্ছা অমির ইস্ট কি তাহলে পাউরুটির স্বাদ ও গন্ধ তৈরি করে। ”

“ একদম ঠিক বলেছিস তুই সাদ ”

“ আচ্ছা যদি ইস্ট ব্যবহার না করে বেকিং সোডা ব্যবহার করা হয় তাহলে কি এই ছিদ্র হবে? ”

“ অবশ্যই হবে। ”

“এই তো আবার প্যাচ লাগালি তুই,তখন কেন আবার ছিদ্র হবে? ” একটু বিরক্ত হয়ে প্রশ্নটা করলো সাদ।

“ শোন তাহলে।”

“ বল তুই। ”

অমির সাদকে বলল, “ সোডা ময়দার সঙ্গে মিশে তখন একটা গ্যাস তৈরি করে। ”

“ কি গ্যাস? ” “ কার্বন-ডাই-অক্সাইড ” অমিরকে বললো সাদ।

“ হ্যাঁ কার্বন-ডাই-অক্সাইড ”। “ সোডা রুটির সাথে কার্বন-ডাই-অক্সাইড তৈরি করে যা রুটিতে বুদবুদের সৃষ্টি করে ”। 

“ আর সেঁকার…”

অমিরকে থামালো সাদ।

“ বুঝতে পারছি আমি। ” আবার ও জয়ের হাসি সাদের মুখে।

“ সেঁকার সময় এসব বুদবুদ পাউরুটিতে ছোট ছোট ছিদ্রের সৃষ্টি করে। ”

“ জি এখন তুই তোর প্রশ্নের উত্তরটা পেলি তো। ”

“ হ্যাঁ রে, এখন Please আয় বার্গারটা খায়,খিদায় আমার পেটে ইঁদুর লাফাচ্ছে। ”

 

 

                                                  

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন