বছর জুড়ে দেশ বিদেশে ‘শিশু দিবস’!

আজ পহেলা জুন আন্তর্জাতিক শিশু দিবস। সারা বিশ্বের শিশুদের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রদর্শনসহ তাদের অধিকার আদায়ের দিবস, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার দিবস।

জুনের ১ তারিখ মূলত "ইন্টারন্যাশনাল ডে ফর প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন" যা কিনা ১৯৫০ সাল থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শিশু দিবস হিসেবেও পালিত হয়ে আসছে।

আর এই দিবস প্রতিষ্ঠার সমস্ত কৃতিত্ব ওমেন্স ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফেডারেশনের। ১৯৪৯ সালে তারা তাদের মস্কোর কংগ্রেসে দিবসটি প্রতিষ্ঠা করে।
তবে তার আগে জেনেভায় ১৯২৫ সালে হওয়া শিশু-কল্যাণ সংক্রান্ত বিশ্ব-সমাবেশে এ দিবস পালনের ঘোষণা দেয়া হয়।
এর আগে সর্বপ্রথম শিশু দিবস পালিত হয়েছিল তুরস্কে ১৯২০ সালের ২৩ এপ্রিলে।

আন্তর্জাতিক শিশু দিবস ছাড়াও নভেম্বরের ২০ তারিখে শিশুদের জন্য রয়েছে আরেকটি দিবস আর তা হল "বিশ্ব শিশু দিবস"।"ইউনাইটেড নেশান্স" স্বীকৃত এই দিবসটিই পৃথিবীর অধিকতর দেশে শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৯৫৪ সালে সংস্থাটির সাধারণ সমাবেশে সর্বপ্রথম এই দিবসটি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। এই দিবসটির উদ্দেশ্যও শিশুদের সার্বিক কল্যাণ।

আন্তর্জাতিক শিশু দিবসকেই "শিশু দিবস" হিসেবে পালন করে এমন দেশের তালিকায় আছে আল্বেনিয়া, বুলগেরিয়া, লেবানন, ভিয়েতনামসহ প্রায় ৪৭টি দেশ।
আর বিশ্ব শিশু দিবসকে শিশু দিবস হিসেবে পালন করা দেশের তালিকায় রয়েছে মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড, ইসরায়েল, কেনিয়া, স্পেনসহ আরো অনেক দেশ।
তবে আন্তর্জাতিকভাবে শিশুদের জন্য দিবস থাকলেও, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রয়েছে নিজস্ব জাতীয় শিশু দিবস।
বাংলাদেশে বর্তমানে তা পালিত হয় মার্চের ১৭ তারিখ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে পণ্ডিত জহরলাল নেহরুর জন্মদিন ১৪ নভেম্বরকে পালন করা হয় শিশু দিবস হিসেবে। চীনে এপ্রিলের ৪ তারিখ, পাকিস্তানে ১ জুলাই, জাপানে ৫ মে এবং যুক্তরাষ্ট্রে জুনের দ্বিতীয় রোববার শিশুদিবস হিসেবে পালন করা হয়। আবার নেপালে পালন করা হয় নেপালি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ভাদ্র মাসের ২৯ তারিখ। অস্ট্রেলিয়াতে তো অক্টোবরের শেষ পুরো সপ্তাহটাই পালিত হয় "চিলড্রেন্স উইক" হিসেবে। ফিলিপাইনেও বলতে গেলে প্রায় পুরো মাসজুড়েই চলে শিশু দিবসের নানা আয়োজন।

শিশুদের প্রতি ভালবাসা ও সম্মান প্রদর্শনের জন্য কোন কোন দেশে শিশু দিবসকে ঘোষণা করা হয়েছে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে। এমন দেশের তালিকায় রয়েছে জাপান, চিলি, কাযাখস্তান, সাউথ কোরিয়া, পোল্যান্ডের নাম। বাংলাদেশেও ১৭ মার্চ সরকারি ছুটি থাকে।

মজার ব্যাপার হল,কিছু দেশে শিশু দিবসকে অভিহিত করা হয় আলাদা একটি নামের মাধ্যমেই। যেমন চীনে এই দিনকে বলা হয় "দ্যা জুন ওয়ান ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেন্স ডে", স্পেনে এটি পরিচিত "দিয়া দেল নিনো(Día del niño)" নামে, আবার থাইল্যান্ডে এর নাম "ওয়ান ডেক(Wan Dek)"।
বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে পালিত হয় এই দিন।

শিশুদের সাথে সময় কাটিয়ে, উপহার দিয়ে আর বিদ্যালয়গুলোতে নাচ-গান ও অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বরণ করে নেয়া হয় তাদের। কোন কোন দেশের বিদ্যালয়গুলোতো এই দিবস উপলক্ষে সকল ক্লাসও স্থগিত রাখে। যেমন নাইজেরিয়াতে শিশু দিবস উপলক্ষে প্রাইমারী ও সেকেন্ডারি স্কুলগুলো সব বন্ধ থাকে।

আসলে যে দেশে যে দিনেই দিবসটি পালন করা হোক না কেন, শিশুদের প্রতি ভালবাসার শুভেচ্ছাবাণী পৌঁছে দেয়াই তার মূল উদ্দেশ্য। তাই আর দেরি না করে চ্যাম্পস টুয়েন্টি ওয়ানের পক্ষ থেকে তোমাদের সবাইকে আজ জানিয়ে দিচ্ছি শিশু দিবসের আন্তরিক শুভেচ্ছা।      

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন