বাংলাওয়াশ হতে পারে প্রেরণা

শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের হ্যামিলটনে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যেই দুই দলই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করলেও কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশের খেলা কার সাথে পড়তে পারে তা নির্ভর করছে এই ম্যাচে জয়-পরাজয়ের উপর।

এই বিশ্বকাপের অন্যতম ফেভারিট নিউজিল্যান্ড রয়েছে দুর্দান্ত ফর্মে। পাঁচটি খেলার পাঁচটিতেই জয় পেয়েছে তারা। প্রতিপক্ষকে প্রতিটি খেলায় রীতিমতো গুঁড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকেট পেয়েছে ওশেনিয়া মহাদেশের এই দলটি।

সেই হিসেবে বাংলাদেশ কিছুটা পিছিয়েই আছে বলতে হবে। গ্রুপ পর্বের ৫ খেলায় জয় এসেছে ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড আর আফগানিস্তানের সাথে। শ্রীলঙ্কার সাথে হারতে হয়েছে আর অস্ট্রেলিয়ার সাথে খেলাটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড মুখোমুখি হয়েছে ৬ বার। ৬ বারই জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। তবে এতকিছুর পরও বাংলাদেশের জন্য সুখস্মৃতি হয়েছে পরপর দুই সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার স্মৃতি। তবে ক্রিকেটের পরিভাষায় এটি ‘বাংলাওয়াশ’ নামেই বেশি পরিচিত। শব্দটি এতোটাই জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে বর্তমানে এটি রীতিমতো একটি আভিধানিক শব্দে পরিণত হয়েছে। ২০১০ সালে ৪-০ তে এবং ২০১৩ সালে ৩-০ তে নিউজিল্যান্ডকে বাংলাওয়াশ করে বাংলাদেশ। অর্থাৎ শেষ ৭ বারের মোকাবেলায় বাংলাদেশের জয় ৭টিতেই।

বাংলাওয়াশ ২০১০

১ম ওডিআইঃ বাংলাদেশ ৯ রানে জয়ী

২য় ওডিআইঃ বৃষ্টির কারণে ম্যাচ পরিত্যক্ত

৩য় ওডিআইঃ বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী (৬০ বল হাতে রেখেই)

৪র্থ ওডিআইঃ বাংলাদেশ ৯ রানে জয়ী

৫ম ওডিআইঃ বাংলাদেশ ৩ রানে জয়ী

৪টি ম্যাচের ২টিতে ম্যাচসেরা হন সাকিব আল হাসান, একটিতে সোহরাওয়ারদি শুভ ও একটিতে রুবেল হোসেন।

বাংলাওয়াশ ২০১৩

১ম ওডিআইঃ বাংলাদেশ ৪৩ রানে জয়ী

২য় ওডিআইঃ বাংলাদেশ ৪০ রানে জয়ী

৩য় ওডিআইঃ বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী (৪ বল হাতে রেখেই)

ম্যাচ তিনটিতে সেরা হন যথাক্রমে রুবেল হোসেন, সোহাগ গাজী এবং শামসুর রহমান।

দেখা যাচ্ছে সাতটির মধ্যে পাঁচটি ম্যাচেই বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিং করে জয়লাভ করেছে। সুতরাং এই ম্যাচেও টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং নিলে বাংলাদেশ মানসিকভাবে এগিয়ে থাকতে পারবে বলে ভাবা হচ্ছে। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনও রান ডিফেন্সের অনুকূলে। এই বিশ্বকাপের রেকর্ডও বলছে প্রথমে ব্যাট করা দলগুলোই বেশিরভাগ জয়লাভ করেছে। আর সাকিব আল হাসান এবং রুবেল হোসেন হতে পারেন বাংলাদেশের জন্য কি প্লেয়ার। তবে ৫ ম্যাচে ২৫৬ রান করে মুশফিকুর রহিম আছে বাংলাদেশের রান সংগ্রাহকের তালিকার শীর্ষে। টানা ৪টি অর্ধশতক করে বেশ ফর্মেই রয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। আর গত ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরি করা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়েও আশা অনেক। অন্যদিকে ৬টি করে উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ তিন উইকেট শিকারি মাশরাফি, রুবেল এবং তাসকিন। তবে গত ম্যাচে ৪ উইকেট নিয়ে রুবেল আছে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে।

অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডন ম্যাককালাম, ক্যান উইলিয়ামসন এবং কোরি এন্ডারসন রয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে। ১৯৩.০২ স্ট্রাইক রেট নিয়ে এই তালিকার শীর্ষে আছেন ম্যাককালাম। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ রান করা এই মারমুখী ব্যাটসম্যানের ৫ ম্যাচে মোট রান ২৪৯। অন্যদিকে সেরা ৫ উইকেট শিকারির প্রথম ৫ জনই নিউজিল্যান্ডের বোলার। ২য়, ৪র্থ এবং ৫ম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ট্রেন্ট বোল্ট (১৩টি), টিম সাউদি (১৩টি) এবং ড্যানিয়েল ভেটরি (১২টি)। ৩৩ রান দিয়ে ৭ উইকেট নেয়া সেরা বোলিং ফিগারটা টিম সাউদির দখলে রয়েছে। ওভার প্রতি ৩ রান দিয়ে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সেরা ইকোনমি রেট ভেটরির।   

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন