হরতালে থেমে নেই ডিআরএমসি ফেস্ট

সবকিছু আগের দিনের মতই আছে। দেয়ালে ঝুলছে প্রতিযোগিদের তোলা ছবি। রুমের চারদেয়াল ঘিরে ওয়াল পেপারের প্রদশর্নী। ক্যাম্পাস জুড়ে ছড়িয়ে রাখা ফেস্টের বিভিন্ন ব্যানার ফেস্টুন। হলরুমে শিক্ষার্থীদের কোলাহল। নেই শুধু প্রথম দিনের মত ফেস্টের প্রাণ-প্রাচুর্য্য। প্রতিযোগী শিক্ষার্থীরাও এসেছে। তবে তাদের সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় বেশ কম।

তুহিন রেবেকা নামের একজন অভিভাবক তার সন্তানকে নিয়ে এসেছেন লালমাটিয়ার জাকির হোসেন রোড থেকে। তিনি জানালেন, হরতালের মধ্যেও তিনি সন্তানের আগ্রহের কাছে হার মেনে নিয়ে এসেছেন ফেস্টে।

ধানমন্ডি থেকে আসা আরেকজন অভিভাবক শংকরি সাহা বলেন, মেয়ের স্কুল অবরোধের কারণে বন্ধ। ক্লাস হচ্ছে না। আজ আবার হরতাল।

এ কারণে যদি কোনো কো-কারিকুলাম একটিভিটি থেকেও বঞ্চিত হয় তাহলে আমাদের সন্তানেরা যাবে কোথায়? তাই নিজের গাড়ি থাকলেও রিকশায় করে মেয়েকে এখানে নিয়ে এসেছি।

হরতাল অবরোধে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হলেও প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে তা কিছুটা কমই। বরং ঘর থেকে বের হতে পারাতেই যেন খুশি তারা। প্রতিযোগিতায় এসে এমনটাই জানালো মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রামিসা আলম, সেন্ট যোসেফ স্কুলের শিক্ষার্থী জুনায়েদ মোহাম্মদ আবু সাইদ, হলিক্রস কলেজের একাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সারাহ আহমেদ বিদূষী।

দ্বিতীয় দিনে এসে ফেস্ট হরতালের কবলে পড়ায় বেশ উদ্বিগ্ন ফেস্টের আহ্বায়ক কলেজের সহকারী অধ্যাপক মির্জা তানবিরা সুলতানা নিপা, ফেস্টের সদস্য সচিব সহকারী অধ্যাপক রতন কুমার সরকার, ফেস্টের সদস্য সহকারী অধ্যাপক নুরুন নাহার এবং প্রভাষক সাগর চন্দ্র দাশ।

তারা জানালেন, চলমান অবরোধের কারণে এবারের ফেস্ট ৮ থেকে ১০ তারিখে হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে আনা হয়। তারপরও দ্বিতীয় দিনে এসে হরতালের মুখে পড়তে হলো তাদের। এতে করে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহন আগেরবারের চেয়ে এবার বাড়ার কথা থাকলেও তা আর হচ্ছে না। 

তারপরও থেমে নেই দ্বিতীয় ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ জাতীয় আর্ট অ্যান্ড ফটো ফেস্ট ২০১৫। আগের দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও ফেস্টের সূচি মেনে শুরু হয় অনুষ্ঠান।

দর্শনার্থী কম থাকলেও সকাল ১০টায় খুলে দেওয়া হয় ফটো ও দেয়াল পত্রিকা টাঙ্গিয়ে রাখার রুমের দরজা। এর কিছুক্ষণ পরে শুরু হয় সেকেন্ডারি গ্রুপের স্কেচ এবং সিনিয়র গ্রুপের কালার আর্ট প্রতিযোগিতা। একই সঙ্গে সেমিনার রুমে শুরু হয় এবারের ফেস্টে শর্টফিল্ম বিভাগে জমা পড়া বাছাইকৃত শর্টফিল্ম প্রদর্শনী।

বেলা এগারটায় শুরু হয় সব গ্রুপের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কুইজ প্রতিযোগিতা। দুপুর বারোটায় সিনিয়র গ্রুপের এবং দুইটায় সেকেন্ডারি গ্রুপের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে শেষ হয় কুইজ প্রতিযোগিতা। মাঝবিরতির আগে পোট্রের্ট বিভাগে সিনিয়র গ্রুপের প্রতিযোগিদের নিয়ে শুরু হয় আর্ট প্রতিযোগিতা।

বিকেল তিনটায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ব্যান্ড শহরতলি, অশ্রুত, সার্কেল, রেমেয়ান ব্যান্ড প্রজেক্ট এবং বাইরের কলেজের দুটি ব্যান্ড পেজ থার্টিওয়ান এবং নস্টালজিক অংশ নেয়।

২৮ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই ফেস্ট শেষ হচ্ছে আগামীকাল। এদিন বিজয়ী প্রতিযোগিদের মধ্যে ক্রেস্ট এবং সনদ বিতরণ করবেন ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী সংসদ সদস্য নসরুল হামিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন ইউনিভার্সাল ফুড লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মিসেস সোহানি হোসেন।

ছবি : রাফসান জাফর

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন