২০১৫ কি অধিবর্ষ ( Leap Year ) ? হয়তোবা প্রশ্ন শুনে বলবে না । কেননা ২০১৫ সাল ৪ দিয়ে বিভাজ্য না । কেননা ২০১৫ কে ৪ দিয়ে ভাগ করলে তা নিঃশেষে বিভাজ্য হয় না ।
কিন্তু তোমরা কি বলতে পারবে অধিবর্ষ কেন হয় ? বা কেন অধিবর্ষ ৪ বছর পরপর হয় ? চলো অধিবর্ষ হওয়ার রহস্যটা জেনে নেই ।
আমরা জানি , সূর্যের মহাকর্ষ বলের আকর্ষণে পৃথিবী নিজের অক্ষের উপর অবিরাম ঘুরতে ঘুরতে একটি নির্দিষ্ট পথে নির্দিষ্ট দিকে ও নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে । পৃথিবীর এই গতিকে বার্ষিক গতি ( Annual Motion ) বলে । এই বার্ষিক গতিকে আবার পরিক্রমণ গতি ( Revolution Motion ) বলে ।
একবার সূর্যকে পূর্ণ পরিক্রমণ করতে পৃথিবীর সময় লাগে ৩৬৫ দিন ৫ ঘণ্টা ৪৮ মিনিট ৪৭ সেকেন্ড । একে আমরা সৌরবছর ও বলে থাকি ।
অর্থাৎ, দেখা যাচ্ছে প্রতি বছর প্রায় ৬ ঘণ্টা অতিরিক্ত থেকে যায় । এই অতিরিক্ত সময়ের সামঞ্জস্য রাখতে প্রতি ৪ বছর অন্তর ফেব্রুয়ারি মাসে ২৪ ঘণ্টা বা ১ দিন বাড়ানো হয়ে থাকে । তাহলে , যে বছর ফেব্রুয়ারি মাসকে ১ দিন বাড়িয়ে ২৯ দিন করা হয় সে বছরটিকে ৩৬৬ দিন ধরা হয় । অর্থাৎ, বছরটিকে অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার বলা হয় ।
সাধারণত কোনো বছরকে ৪ দিয়ে ভাগ করলে যদি ভাগশেষ না থাকে তবে ঐ বছরকে অধিবর্ষ বা লিপ ইয়ার ( Leap Year ) ধরা হয় ।
( বাংলা বর্ষপঞ্জি, যা সম্রাট আকবর কর্তৃক প্রবর্তিত হয়, তাতে অধিবর্ষের ধারণা দেখা যায় না। পরবর্তিতে বাংলাদেশে বাংলা একাডেমী কর্তৃক প্রস্তুত নতুন বর্ষপঞ্জিমতে বাংলা বর্ষপঞ্জিতেও গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসরণে ফেব্রুয়ারি মাসের সমসাময়িক বাংলা মাসে, সাধারণত ফাল্গুন মাসে, প্রতি চার বছর পর পর একবার অতিরিক্ত একটি দিন গণনা করা হয়। তবে ভারতে ও বাংলাদেশের হিন্দুগণ ধর্মীয় কারণে এই রীতি অনুসরণ করেন না। সনাতনী বাংলা বর্ষপঞ্জিতে অধিবর্ষ একটু জটিল নিয়মে আসে। এক্ষেত্রে সাল থেকে ৭ বিয়োগ করে ৩৯ দিয়ে ভাগ করতে হয়। যদি ভাগশেষ শূন্য বা চার দ্বারা নিঃশেষে বিভাজ্য হয় তবে ঐ সালকে অধিবর্ষ ধরা হয়। আর অধিবর্ষের অতিরিক্ত এক দিন চৈত্র মাসে যোগ হয়। এই হিসাব অনুযায়ী প্রতি ৩৯ বছরে ১০টি অধিবর্ষ আসে, যেটা জোতির্বৈজ্ঞানিক বর্ষপঞ্জির সাথে যথেষ্ট সামাঞ্জস্যপূর্ণ। ) – সূত্র : বাংলা উইকিপেডিয়া