দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামটি যে ক্রিকেটের জন্য সত্যিই ‘ওয়ান্ডারফুল’ গত রোববার (১৮ জানুয়ারি, ২০১৫) তার প্রমাণ মিলল আরেকবার।
আব্রাহাম বেঞ্জামিন ডি ভিলিয়ার্স (সংক্ষেপে এ বি ডি ভিলিয়ার্স)এই তারিখটি অবশ্যই দীর্ঘদিন মনে রাখতে চাইবেন। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়ায় জন্ম নেয়া এই ক্রিকেটার এ দিন গড়েছেন ৩১ বলে সেঞ্চুরির এক অবিশ্বাস্য রেকর্ড।
তিনি যখন ব্যাটিংয়ে নামেন তখন দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে ছিল মাত্র ১১.২ ওভার। এই সময়ে ক্রিজে নেমে একজন ব্যাটসম্যান কত রানই বা করতে পারেন। বড় জোর ৭০ কিংবা ৮০। কিন্তু ডি ভিলিয়ার্স ৯টি চার ও ১৬টি ছক্কার সাহায্যে করলেন মাত্র ৪৪ বলে ১৪৯ রান।
দ্রুততম শতকের আগের রেকর্ডটি ছিল অ্যান্ডারসনের। ২০১৪ সালের পহেলা জানুয়ারি নিউজিল্যান্ডের কুইন্সটাউনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই অলরাউন্ডার ৩৬ বলে শতক করে ভাঙেন পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদির রেকর্ড।
রেকর্ড ভাঙ্গা-গড়ার এই খেলায় আফ্রিদি অবশ্য নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতেই পারেন। কারণ তার এই দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটি টিকেছিল ১৮ বছর। তবে তার ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ড এখনো অটুট রয়েছে।
এই রেকর্ডটি গড়ার পথে তিনি আরো কয়েকটি রেকর্ড গড়েছেন। ১৬ বলে ফিফটি করে করে ভেঙেছেন লঙ্কান ব্যাটসম্যান সনাত জয়াসুরিয়ার গড়া ১৯ বছর আগের রেকর্ড।
ওয়ানডেতে এক ইনিংসে সর্বাধিক ১৬টি ছক্কার রেকর্ডে ভারতের রোহিত শর্মার পাশে বসেছেন ডি ভিলিয়ার্স।
ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ম্যাচে তিন সেঞ্চুরিও এই প্রথম । ওয়ানডে ক্রিকেটে এর আগে ১১৬টি ইনিংসে দুটি করে শতক হয়েছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে হাশিম আমলা, রিলে রুশো ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের শতকে ৫০ ওভারে ২ উইকেটে ৪৩৯ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এটি ওয়ানডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস। ইনিংসের শেষ তিন বলে রান করতে না পারায় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার দলীয় সর্বোচ্চ ৪৪৩ রানের রেকর্ডটি ভাঙতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা।
স্বাগতিক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান রুশো আউট হন ১১৫ বলে ১২৮ রান করে । দারুণ ফর্মে থাকা হাশিম আমলা ১৪২ বলে করেন অপরাজিত ১৫৩ রান। এরপর শতক করেন তিন নম্বরে নামা এবি ডি ভিলিয়ার্স।
উদ্বোধনী জুটিতে আমলা-রুশোর ২৪৭ রান দক্ষিণ আফ্রিকার সেরা শুরু। আমলা-ডি ভিলিয়ার্সের ৬৭ বলে ১৯২ রানের জুটিতে আমলার অবদান ৩৩!
গত রোববারের দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসটি জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্স স্টেডিয়ামে কোনো দলের সর্বোচ্চও।
২০০৬ সালের ১২ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই মাঠেই ৪৩৪ রান তাড়া করতে নেমে ইতিহাস গড়ে ৪৩৮ রান করে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে ক্রিকেটে এখনো সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড হয়ে আছে এটা।