ভারোত্তোলন এক ধরনের ক্রীড়াবিশেষ। ভারোত্তোলনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, একজন প্রতিযোগী সর্বাধিক কতটুকু ওজন উত্তোলন করতে পারে। ভারোত্তোলন খেলায় অংশগ্রহণকৃত খেলোয়াড়রা ভারোত্তোলক নামে পরিচিত। ভারোত্তোলনকে ইংরেজিতে বলা হয় Weightlifting।
আধুনিক অলিম্পিকে এই ক্রীড়া অত্যন্ত জনপ্রিয়। ক্রীড়ার মহাযজ্ঞ এই অলিম্পিকে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে আসা পালোয়ানরা ভার তোলার প্রতিযোগিতা করে থাকেন। অলিম্পিকে শুধু বারবেল ব্যবহার করে ভার তুলতে হয়। প্রত্যেক ওয়েটলিফটার ৩ বার বারবেল ব্যবহার করে ভার তোলার সুযোগ পান এই প্রতিযোগিতায় আর এর মধ্যে থেকে সেরা দুইটি পারফর্ম্যান্স বিচারকরা বিচার করে থাকেন।
অ্যাথলেটদের ওজনের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। পুরুষদের ক্ষেত্রে ৫৬,৬২,৬৯,৭৭,৮৫,৯৪,১০৫ ও +১০৫ কেজির ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। মহিলাদের ক্ষেত্রে ৪৮,৫৩,৫৮,৬৩,৬৯,৭৫ ও +৭৫ কেজির ক্যাটাগরিতে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
ভারোত্তোলনে স্ন্যাচ এবং ক্লিন এন্ড জার্ক – এ দু’টি বিষয়ে প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। স্ন্যাচের সময় একজন ভারোত্তোলককে মাটি থেকে ভার উত্তোলন করে মাথার উপরে নিতে হয়। ক্লিন এন্ড জার্ক এর সময় শুধু মাটি থেকেই ভার উত্তোলন করতে হয় না বরং ভার উত্তোলন করে কিছুটা সময়ের জন্য কাঁধ বরাবর রাখতে হয়। পরবর্তীতে কাঁধ থেকে মাথার উপরে ভার উত্তোলন করে মাটিতে নামাতে হয়। মাথার উপর ভার উত্তোলনের সময় শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখাটা বড় চ্যালেঞ্জ ভারোত্তোলকের জন্য।
ভারোত্তোলকরা কোমরে বেল্ট পরিধান করে থাকেন। মূলত ব্যাক সাপোর্টের জন্য এই বেল্ট পরিধান করা হয়। এছাড়া, ভারোত্তোলনের পূর্বমুহূর্তে ভারোত্তোলকরা চকের গুঁড়া দিয়ে দু’হাতের তালুতে ঘষে নেন। এর ফলে বারবেল হাত থেকে ছুটে যায় না এবং হাতের তালু শুষ্ক থাকে।
ভারোত্তোলন খেলায় ব্যবহৃত ভারের রঙের একটি নির্দিষ্ট অর্থ রয়েছে। যেমন সবুজ রঙ ১০ কেজি, হলুদ রঙ ১৫ কেজি, নীল রঙ ২০ কেজি ও লাল রঙ ২৫ কেজি নির্দেশ করে।
শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখার জন্য ব্যায়াম করা খুব প্রচলিত একটি বিষয়। ব্যায়ামের সময় হাতের বাহুর বল ও পেশীশক্তি বাড়ানোর জন্য অনেকেই ভার উত্তোলন করে থাকেন। তবে সঠিক উপায়ে ভার উত্তোলন না করলে বরং তা শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই ভারোত্তোলনের সময় ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে ব্যায়ামে নেমে পড়ার আগে এর সম্পর্কে ভালোমত জেনে নেওয়া জরুরী।