উপসাগর (Bay) নামটি আমাদের কাছে খুব পরিচিত কেননা হাত বাড়ালেই যে বঙ্গোপসাগর যা শুধু প্রতিবছর আমাদেরকেই নয় গোটা বিশ্বের হাজারো মানুষকে বাধ্য করে তার সৌন্দর্যের দেখে মুগ্ধ হবার জন্য। কি এই উপসাগর? তিন দিক স্থল দ্বারা বেষ্টিত একটি জলভাগ। উপসাগরের জল বড়ই শান্ত হয়। ইংরেজিতে ছোটো আকারের উপসাগরকে ইংরেজিতে বলা হয় Bay। বড় বড় উপসাগরকে ইংরেজিতে Gulf বলা হয়। চলো আজ উপসাগর নিয়ে দ্বিতীয় পর্বে দেখে নেয়া যাক ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগর, মেক্সিকো উপসাগর ও হাডসন উপসাগর সম্পর্কে কিছু তথ্য। প্রথম পর্বে আমরা জেনেছি পারস্য উপসাগর, বঙ্গোপসাগর ও গিনি উপসাগর সম্পর্কে।
ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগর
উপসাগর হিসাবে যতটানা এর পরিচিতি তার চাইতে ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগর বিখ্যাত এর মধ্যে বসবাসকারী হরেক রকমের প্রজাতির জন্য। ৭০০ মাইল দীর্ঘ এই উপসাগর স্থান দিয়েছে হাঙ্গর, তিমি, সামুদ্রিক কচ্ছপ এবং আরও নানান জলজ প্রাণীকে। বিশ্বের ক্ষুদ্রতম শুশুক সহ অনেক প্রজাতির সামুদ্রিক জীবের এক অসাধারণ বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায় এই উপসাগরে। শুধু তাই নয় চিংড়ি, সার্ডিন এবং দৈত্য আকৃতির স্কুইড এর দেখা মেলে এই উপসাগরে। পর্যটকরা প্রতি বছর এখানে আসে পানির ভিতর এই রঙিন দুনিয়াটা দেখার জন্য। এটির তটরেখা বাজা ক্যালিফোর্নিয়া , বাজা ক্যালিফোর্নিয়া সুর , সোনোরা রাজ্যের সীমানা দ্বারা বেষ্টিত। ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগরের আশেপাশে রয়েছে ছোট বড় ৩৭টি দ্বীপ। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে Isla Ángel de la Guarda ও Tiburón Island।
মেক্সিকো উপসাগর
মেক্সিকো উপসাগর মূলত উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দ্বারা বেষ্টিত মহাসাগরের অববাহিকা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, লুইজিয়ানা, মিসিসিপি, আলাবামা, এবং ফ্লোরিডা রাজ্যের অবস্থান এই উপসাগরের উত্তর উপকূলে অবস্থিত। এছাড়া, মেক্সিকোর পূর্বে অবস্থিত এই উপসাগরটি। বাণিজ্যিক ভাবে ক্যালিফোর্নিয়া উপসাগর মৎস্য চাষের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল। এই উপসাগরটি প্লেট টেকটনিকের কারণে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন বছর আগে গঠিত হয়েছিল। ২০১০ সালে এই উপসাগরের খনি থেকে তেল নিঃসরণ হয়ে ঘটেছিল প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনা। ব্রিটিশ পেট্রোলিয়ামের মালিকানাধীন খনিটির প্লাটফর্মে অগ্নিকান্ডের মাধ্যমে সূত্রপাত হয় ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের। ক্ষতিগ্রস্ত খনির মুখ থেকে তিন মাসে অন্তত ৫০ লাখ ব্যারেল (প্রায় ৮০ কোটি লিটার অপরিশোধিত তেল) নির্গত এই উপসাগরটিতে এবং ব্যাহত হয় উপসাগরের তীরবর্তী পাঁচ অঙ্গরাজ্যের মানুষ ও পশুপাখির জীবনযাত্রা।
হাডসন উপসাগর
উত্তর পূর্ব কানাডায় অবস্থিত হাডসন উপসাগরটি উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের অন্তর্গত। স্যার হেনরি হাডসনের নামানুসারে এই উপসাগরটির নামকরণ করা হয়েছে। তিনি ১৬১০ সালে তার জাহাজ ডিসকভারি করে এই উপসাগরটি প্রথম আবিষ্কার বা খুঁজে বের করেন। এই উপসাগরের দক্ষিণ বাহুর নাম হচ্ছে জেমস বে। উপসাগরটি তুলনামূলক অন্য উপসাগর থেকে কম গভীর ও এর গড় গভীরতা প্রায় ১০০ মিটার। বছরের অধিকাংশ সময় এই উপসাগরের অংশবিশেষ সামুদ্রিক বরফে ঢাকা থাকে। শীতকালে সম্পূর্ণ উপসাগরটিই প্রায় বরফে ঢাকা পড়ে যায়।