Acid Base Indicator

বিজ্ঞান নিয়ে অনেকের মনেই ভয়ভীতি থাকে। জটিল সব সূত্র, গাণিতিক ব্যাখ্যা আর কাঠখোট্টা সব শব্দ শুনলেই কেমন যেন ভয় ভয় লাগে। জটিল সব ঘটনাকে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়ে সহজভাবে তুলে ধরার কাজটিই করছে সায়েন্স রকস টিভি অনুষ্ঠানটি। প্রতি সপ্তাহে ২টি করে ৫২ সপ্তাহে মোট ১০৪টি মজার মজার সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট দেখানো হবে তোমাদের আর বলে দেয়া হবে সেটা কেন হলো, কিভাবে হলো। আজ এক ঝলক জেনে নেয়া যাক সায়েন্স রকস টিভি অনুষ্ঠানের সপ্তম পর্বে দেখানো ‘Acid Base Indicator’ পরীক্ষাটি।

আমরা কেমিস্ট্রিতে হয়তো এসিড-ক্ষার নিয়ে পড়েছি। ধরো তোমাকে কেউ লেবুর জুস দিয়ে জিজ্ঞেস করলো এটা এসিড না ক্ষার? তুমি হয়তো জানো লেমন জুস এসিডিক কিন্তু কিভাবে প্রমাণ করবে যে লেবুতে এসিড থাকে? আমরা এই এক্সপেরিমেন্টে দেখাচ্ছি কিভাবে এসিড-বেস চেনা যায়।

যা যা লাগবেঃ
এক্ষত্রে আমাদের জন্য ভাল হয় যদি পরীক্ষাগারে আমরা এক্সপেরিমেন্টটা করতে পারি। আমাদের চারটি টেক্সটিউব, ড্রপার, নাড়ানী, লেমন জুস, ভিনেগার, ওয়াশিং সোডা, চুনের পানি, ফেনোফথ্যালিন, রেড ক্যাভেজের জুস, সাবান, পানি, নীল লিটমাস এবং লাল লিটমাস।

যেভাবে করবোঃ
প্রথমে আমরা দেখব লিটমাস পেপার কোনটিতে কি দেখায়। প্রথমে সাবানে একটি নীল লিটমাস পেপার দিলাম, কোন পরিবর্তন নেই। এবার লাল লিটমাস দিলে দেখা যাবে যে লাল বর্ণ নীলে পরিণত হয়েছে। এবার চুনে নীল লিটমাস দিলাম, কোন পরিবর্তন নেই কিন্তু লাল লিটমাস দিতেই তা নীলে পরিণত হল। এবার ভিনেগারে নীল লিটমাস দিতেই তা লাল হয়ে গেল। লেবুর জুসেও একই ঘটনা; নীল লিটমাস লাল হয়ে যায়। ওয়াশিং সোডা লাল লিটমাস পেপারকে নীল করে দেয়। অনুরূপ চুনের পানিও লাল লিটমাসকে নীল করে।

এবার একটি টেক্সটিউবে কিছু ওয়াশিং সোডা নিয়ে তাতে ড্রপার দিয়ে কয়েকফোটা ফেনোফথ্যালিন মেশায়। দেখা যাবে গোলাপী বর্ণ ধারন করেছে। এবার নিব চুন। আরেকটি টেক্সটিউবে কিছু চুন নিয়ে তাতে ড্রপার দিয়ে কয়েক ফোটা ফেনোফথ্যালিন মেশালে এবারও গোলাপী বর্ণে রূপ নিবে।

এবার নিব বাসায় পাওয়া যায় এমন একটি উপাদান, রেড ক্যবেজের জুস। লেমন জুস, ভিনেগার, ওয়াশিং সোডা ও চুনের পানিতে ক্রমান্বয়ে রেড ক্যবেজের জুস যুক্ত করি। দেখা যাবে লেমন জুস ও ভিনেগার হালকা লাল বা গোলাপি বর্ণ এবং ওয়াশিং সোডা ও চুনের পানিতে সবুজ বর্ণ ধারন করবে।

কেন হলোঃ
এই এক্সপেরিমেন্টে আমরা এসিড এবং ক্ষার জাতীয় কিছু রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করেছি আর তিনটা নির্দেশক- লিটমাস পেপার, ফেনোফথ্যলিন ও রেড ক্যবেজের জুস যা দিয়ে এদের চেনা যায়। প্রশ্ন হলো নির্দেশক কি? নির্দেশক হল এমন সব রাসায়নিক পদার্থ যা কোন পদার্থে যুক্ত হলে বর্ণ পরিবর্তনের মাধ্যমে নির্দেশ করে তা এসিড নাকি ক্ষার। যেমনঃ মিথাইল অরেঞ্জ, মিথাইল রেড। তবে এসিড ক্ষারের মাত্রা পরিমাপের জন্য একটি স্কেল ব্যবহার করা হয় যাকে বলে PH স্কেল।

এসিড নীল লিটমাসকে লাল আর ক্ষার লাল লিটমাসকে নীল করে। আমরা দেখলাম সাবান ও চুনের পানি লাল লিটমাসকে নীল করে। তাই এগুলো ক্ষার। আবার ভিনেগার ও লেমন জুসে নীল লিটমাস লাল হয়; তাই এগুলো এসিড।

এর পরে নির্দেশক হিসেবে ফেনোফথ্যালিন ব্যবহার করলাম যা ক্ষারে গোলাপী বর্ণ প্রদান করে। এরপর আমরা নির্দেশক হিসেবে ব্যবহার করলাম রেড ক্যবেজের জুস যা ক্ষারে সবুজ এসিডে লাল বর্ণ দেয়। আমরা দেখলাম চুনের পানি এবং খাবার সোডায় তা সবুজ বর্ণ ধারন করে অর্থাৎ ক্ষার এবং ভিনেগার ও লেমন জুসে হালকা লাল বা গোলাপী বর্ণ ধারন করে অর্থাৎ এর এসিড।

এভাবে নির্দেশকের সাহায্যে আমরা সহজে এসিড ক্ষার চিনে নিতে পারি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন