১৯৭১ সাল থেকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে আগুন জ্বলেই চলেছে। এই দীর্ঘ সময় ধরে আগুন জ্বলার কারণে এটিকে ‘দ্য গেইটস অব হেল বা দ্য ডোর অব হেল’ বলা হয়। তুর্কেমেনিস্তানের কারাকুম মরুভূমিতে একটি প্রাকৃতিক গ্যাসক্ষেত্রের এই নামকরণ করা হয়েছে।
প্রায় ৩৫০ জনের গ্রাম দারভাজা গ্রামের পাশেই অবস্থিত এই গ্যাসক্ষেত্রের মুখটি ২৩০ ফুট প্রশস্ত। এর আগুন আশেপাশের কয়েক মাইল পর্যন্ত দূর থেকে বোঝা যায়। আগুনের উত্তাপ এতোই যে সেখানে ৫ মিনিটের বেশি থাকা কষ্টকর হয়ে যায়। যদিও রাতে দেখতে অপূর্ব সুন্দর লাগে।
১৯৭১ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রাকৃতিক গ্যাসসমৃদ্ধ এলাকায় অনুসন্ধানের সময় ক্ষেত্রটি আবিস্কার করে। প্রথমে তারা মনে করেছিলেন এটি একটি তেল ক্ষেত্র। তাই ড্রিলিং মেশিন দিয়ে তেল উত্তোলনের জন্য সেখানে ক্যাম্প স্থাপন করেন। কিন্তু পরে তারা সেখান থেকে বিষাক্ত গ্যাস বের হতে দেখেন।
গ্যাস অনুসন্ধানের সময়য অনুসন্ধানকারীরা গ্যাসবহুল গুহার মধ্যে মৃদু স্পর্শ করলে দুর্ঘটনাক্রমে মাটি ধসে পুরো ড্রিলিং রিগসহ পড়ে যায়। যদিও এই দুর্ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। প্রাথমিকভাবে গবেষণা করে বিষাক্ত মিথেন গ্যাসের ব্যাপারে গবেষকরা নিশ্চিত হন। পরিবেশে বিষাক্ত গ্যাস প্রতিরোধ করার জন্য ভূতত্ত্ববিদরা তখন গ্যাস উদ্গিরণ মুখটি জ্বালিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন। তাদের ধারণা ছিল এখানে সীমিত পরিমাণ গ্যাস থাকতে পারে। কিন্তু তাদের ধারণা ভুল প্রমান করে এটি ১৯৭১ সাল থেকে অনবরত জ্বলছে।
ধারণা করা হয় সোভিয়েত ড্রিলিং গিলটি এখনও অগ্নিমুখটির নিচে অথবা আশেপাশেই আছে। তবে সেটি উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক এই নরকের দরজা দেখতে আসেন। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজারের অধিক পর্যটক সেখানে পরিদর্শন করেছেন।