হট্টগোলেও সম্ভব গান উপভোগ

দীর্ঘ ভ্রমণে বা একলা নিভৃতে হেডফোনেই গান শোনাটা অনেকেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে থাকেন। কালের বিবর্তনে হেডফোনের আকার আকৃতি ও ধরণে এসেছে পরিবর্তন। হেডফোন দিয়ে গান বা কোন অডিও শুনার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন বিষয়টি হচ্ছে এর বাহির থেকে আগত শব্দ হ্রাস করার ক্ষমতা অর্থাৎ, গান বা অডিও শুনার সময় বাইরের শব্দ কি পরিমাণে কানে প্রবেশ করছে সেটির উপর অধিকাংশই নির্ভর করে হেডফোনের গুনাগুণ। হেডফোনে বাহিরের অবাঞ্ছিত শব্দের পরিমাণ যত কম হবে তত নিখুঁত ও উপভোগ্য হবে সংগীত বা অডিও শ্রবণ।

শব্দের মানের বিষয়ে যারা বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজী নন তারা বোসের নাম ভালভাবে জেনে থাকবেন। শব্দবিজ্ঞানের জাদুকরখ্যাত অমর গোপাল বোস ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান বিখ্যাত শব্দ প্রকৌশলী ছিলেন। শব্দের বিরক্তি দূর করে যিনি শব্দবিজ্ঞানকে এগিয়ে দিয়েছিলেন সময়ের সঙ্গে। স্টুডিও এবং বিমানে, যেখানে অবাঞ্ছিত শব্দ এড়ানো অপরিহার্য এমন ক্ষেত্রে বোস সিস্টেমকে শীর্ষস্থানীয় বলে বিবেচনা করা হয়।

১৯৭৮ সালে অমর বোস ইউরোপ যাত্রার পথে উড়োজাহাজে সরবরাহ করা হেডফোন ব্যবহার করে উপলব্ধি করেন প্লেনের শব্দে তিনি অডিও ভালোভাবে শুনতে পারছেন না। পরবর্তীতে বোস করপোরেশনের বানানো বিশেষ ধরনের হেডফোন উৎস শব্দ ছাড়া বাকি সব শব্দকে নাকচ করে ফেলে। কাজেই বিমানের ভেতরে গান শোনা বা সিনেমা দেখা হয়ে উঠে আকর্ষণীয়।

একটি Noise-cancelling headphone এ সাধারণত কয়েকটি অংশ থাকে, যা এর কর্মক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়। হেডফোনের বাইরের অংশে একটি ছোট মাইক্রোফোন যুক্ত থাকে, এটি বাইরের শব্দগুলোকে পরোক্ষভাবে আটকে দেয়। ইয়ারক্যাপের ভেতরে একটি শব্দ হ্রাসকারী সার্কিট বা প্রসেসর থাকে, যা বাইরের উচ্চ শব্দ তরঙ্গের কম্পাঙ্ক অনুযায়ী দিক এবং ধরন দুটিই পাল্টে দিতে পারে।

এই হেডফোনগুলোর সাথে ছোট একটি স্পিকারও যুক্ত থাকে যার মাধ্যমে হেডফোনে বাজতে থাকা মিউজিকের বা অডিওর কিছু অংশ বাইরের দিকে বেরিয়ে এসে কানে অন্য শব্দ প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। আবার, কিছু কিছু হেডফোনে Active Noise Cancelling এর জন্য এতে একটি AAA ব্যাটারী থাকে। এক চার্জে ব্যাটারিটি প্রায় ৩০-৩৫ ঘন্টা কাজ করে। ব্যাটারীর আয়ু কমে ৫ ঘন্টার মধ্যে এলে একটি আলো সেটা জানান দেয়।

Noise Cancelling Headphones
ছবি : সংগৃহীত

ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিশেষ করে বিমান ভ্রমণে এসব হেডফোনের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। প্লেনের উচ্চ মাত্রার শব্দ থেকে রেহাই পেতে যাত্রীরা এই ধরণের হেডফোন ব্যবহার করে থাকেন। তবে বর্তমানে বিভিন্ন দেশে মোবাইলের সাথে এরকম হেডফোন দেয়া হয়। এছাড়া, বিখ্যাত অ্যাপলের আইফোনের নতুন ডিভাইসগুলোর সাথে যে হেডফোন দেয়া হয় তা অনেকাংশেই বাইরের শব্দকে দূর করে দেয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন