চাটনির নাম শুনলেই অনেকের জিহ্বায় পানি চলে আসে। তবে সেটা যদি হয় লাল পিঁপড়া দিয়ে তৈরি, তাহলে কী হবে? হ্যাঁ, ভারতের ছত্তিশগড়ের বস্তার জঙ্গলে আদিবাসীদের প্রিয় খাবার চাপড়া চাটনি, যা তৈরি হয় লাল পিঁপড়ে দিয়ে। আন্তর্জাতিক খাদ্য তালিকায় স্থান করে নিয়েছে এটি।
এ চাটনি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনই উপকারি। শালগাছে কাঠ পিঁপড়ার মত দেখতে লাল রঙের এক প্রজাতির পিঁপড়া পাওয়া যায়। আদিবাসীরা এই পিঁপড়া আর তার ডিম সংগ্রহ করে আনেন জঙ্গল থেকে। তারপর লবন, লঙ্কা, আদা আর সামান্য মিষ্টি দিয়ে বানিয়ে ফেলেন এই চাটনি।
পিঁপড়ার শরীরের ফরমিক অ্যাসিডে থাকে টক, আর ঝাল মিষ্টি সহযোগে চাটনি হয়ে ওঠে চটপটা। এতে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন আর ক্যালসিয়াম থাকে। থাকে জিঙ্ক, ভিটামিন বি১২, যা মানসিক অবসাদ ও ক্লান্তি দুর করে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বানায়। ফলে চটপটা স্বাদের চাটনি হয়ে ওঠে পুষ্টি গুণে ভরপুর।
তবে এই চাটনি তৈরিতে কম কষ্ট পোহাতে হয় না আদিবাসীদের। পিঁপড়ার কামড়ের অসহ্য যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। কারণ ডিম দেয়া নারী পিঁপড়ার চারপাশ পুরুষ পিঁপড়া ঘিরে রাখে। যদি কোনও বিপদের সম্ভাবনা দেখা দেয় তাহলে এই পুরুষ পিঁপড়া আক্রমণ শুরু করে। সংগ্রহকারীরা পুরুষ পিঁপড়া মেরে ফেলে। তারপর সেটি ব্যাগে আলাদা করে ভর্তি করে। এরপর নারী পিপড়া ও ডিম সংগ্রহ করা হয়। চাটনিটি জনপ্রিয় হওয়ার কারণে ছত্তিশগড়ের পাশাপাশি ওড়িষ্যা, ঝড়খান্ডে এর চাটনি তৈরি করা হয়।
যারা প্রথমবারের মতো এটি খেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য সতর্কতা হলো, এতে প্রচুর ঝাল থাকে। স্থানীয় বাজারে প্যাকেটে করে এগুলো বিক্রি করা হয়।