আপনার দেহঘড়ি জুড়েই গানের প্রভাব

গান আমাদের জীবনের এক অপরিহার্য অংশ। প্রতিদিন একটু হলেও গান না শুনলে যেন আমাদের কিছু একটা অপূর্ণ থেকে যায়।

আমদের সকালে ঘুম ভাঙে অ্যালার্মের বাজনায়, কাজের ফাঁকে ফাঁকে আমরা গান শুনি, বাসে বা গাড়িতে প্রায়ই আমাদের হেডফোনে বাজতে থাকে গান। আর মাঝে মাঝে কনসার্ট বা সঙ্গীতানুষ্ঠানে গিয়ে গান উপভোগের ব্যাপার তো আছেই।

এভাবে গান আমাদের মাঝে ভালোলাগার অনুভূতি তৈরি করে। কিন্তু ঠিক কীভাবে গান আমাদেরকে মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে তা কী আমরা জানি?

রেয়ারসন ইউনিভার্সিটির মনোবিজ্ঞানের প্রফেসর ফ্রাঙ্ক এ রুশো বলেন, ‘গান আমাদের মন ও শরীরের উপর কি ধরণের প্রভাব ফেলবে তা আসলে নির্ভর করে গানের ধরণের উপর। অনেকের হালকা ধরণের মিউজিক ভালো লাগে, আবার অনেকের ধুমধাড়াক্কা গান’।

তবে পছন্দ-অপছন্দের হিসেব বাদ দিয়েও গান আমাদের মন ও শরীরে কিছু অংশে প্রভাব বিস্তার করে থাকে।

মন ভালো হয়ে যায়
আপবিট মিউজিকের যেসব গান আছে সেগুলো শুনলে আমাদের মন ভালো হয়ে যায়। তবে এক্ষেত্রে মন ভালো করার জন্য আপনার নিজের ইচ্ছাটাও থাকতে হবে। আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে, গান শুনলে আমাদের মস্তিষ্ক থেকে আনন্দদায়ক ডোপামিন হরমোন নিঃসৃত হয় যা আমাদের মনকে ভালো করে দেয়।

কাজের স্পৃহা বেড়ে যায়
১৯৯৩ সালে ‘দ্য মোজার্ট ইফেক্ট’ নামের একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে মোজার্ট মিউজিক শুনলে মানুষের কাজের স্পৃহা বেড়ে যায়। তবে এটা শুধু ক্লাসিক্যাল মিউজিকের ক্ষেত্রেই নয়, ‘ইনটেলিজেন্স’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক গবেষণা থেকে জানা যায়, যারা গান শোনে না তাদের থেকে যারা গান শোনে তাদের কর্মক্ষমতা বেশি থাকে।

পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে যায়
অনেক সময় দেখা যায়, আমরা কোন নির্দিষ্ট গান শুনলে আমাদের নির্দিষ্ট কিছু স্মৃতি মনে পড়ে যায়। যেমন, ‘কফি হাউস’ বা ‘পুরনো সেই দিনের কথা’ এসব গান শুনলে আমাদের অতীতের অনেক স্মৃতিই মনের পর্দায় ভেসে উঠে। ‘নিউরো ফিজিকোলজিয়া’ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যারা গান করেন তাদের স্মৃতিশক্তি অন্যদের তুলনায় ভালো হয়।

ত্বকে অনুভূতি জাগায়
অনেক সময় গান অপ্রত্যাশিতভাবে দিক পরিবর্তন করলে (যেমন নোটেশন পরিবর্তন বা মেলোডি পরিবর্তন) তা আমাদের ত্বকে শিরশিরে অনুভূতি জাগায় বা বলা যেতে পারে শিহরণ সৃষ্টি করে।

ব্যায়াম করা যায় অনেক্ষন ধরে
অনেকেই আছেন যারা গান শুনতে শুনতে ব্যায়াম করেন। এটা খুবই ভালো। কেননা আপনার কানে বাজতে থাকা গানের ফলে আপনি কঠোরভাবে ও দীর্ঘ সময় ধরে ব্যায়াম করতে পারেন। অন্যান্য কাজেও আপনি সমানভাবে শক্তি পাবেন যদি আপনি গানের মধ্যে থাকেন।

রক্তচাপের ওপর প্রভাব ফেলে
গবেষণা বলছে, গানের ধরণের ওপর নির্ভর করে মানুষের রক্তচাপ বাড়তে বা কমতে পারে। যেমন- বেটোভেন, পুচিনি বা ভার্দির মিউজিক শুনলে মানুষের হৃদকম্পন কমতে থাকে এবং রক্তচাপ হ্রাস পায়। অন্যদিকে রক বা মেটাল ঘারাণার গান শুনলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে থাকে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন