ব্যায়াম শুরুর ঠিক আগে…

একটু একটু করে মুটিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিদিনই ভাবছেন কাল থেকে শুরু করবো ব্যায়াম। কিন্তু আলসেমি আর সময়ের অভাবে কিছুতেই শুরু করতে পারছেন না। অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বেশ আটঘাট বেঁধেই নেমে পড়লেন ব্যায়াম করতে। কিন্তু বেশ কিছুদিন ব্যায়াম করার পর লক্ষ্য করলেন তেমন লাভ হচ্ছে না। সাদা চোখে মনে হচ্ছে এতোদিনের সাধনার ব্যায়াম কোন প্রভাবই ফেলেনি শরীরে। এ ধরনের সমস্যার যারা মুখোমুখি হয়েছেন অথবা যারা শরীরটাকে ফিট রাখতে ব্যায়াম শুরু করতে যাচ্ছেন তারা জেনে রাখুন ব্যায়াম শুরুর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ‘ওয়ার্ম আপ’। ওয়ার্ম আপ-এর মাধ্যমে শরীর ও মন দুটোই ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত হয়। কারণ ওয়ার্ম আপের ফলে শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, শরীর ও মাসেলের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে বাড়ে, মাসেলের কাজ করার গতিও বাড়ে, শ্বাস-প্রশ্বাস গতিতে সামঞ্জস্য সৃষ্টি হয়। তাছাড়া এর মাধ্যমে ব্যায়ামের ফলে ইনজুরি, মাসেল পুল, হার্ট অ্যাটাকসহ নানা সমস্যার কাছ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। সর্বোপরি বলা যায় ব্যায়াম শুরু করলে শরীর হঠাৎ যে চাপ সৃষ্টি হয় তা এড়ানোর উপায়ই হচ্ছে ওয়ার্ম আপ। অজ্ঞতার কারনে অনেকেই ব্যায়াম শুরুর আগে ওয়ার্ম আপ করেন না। মনে রাখবেন ওয়ার্ম আপ না করলে আপনার শরীরের ক্ষতি তো হবেই পাশাপাশি বড়ো ধরণের বিপদও হতে পারে।

ওয়ার্ম আপ টিপস :

. প্রতিটি ব্যায়ামের ওয়ার্ম আপের নিয়ম আলাদা।  তাই যখন যে ব্যায়াম করবেন, সেই ব্যায়ামের কী ওয়ার্ম আপ হবে তা আগেই জানা দরকার।

. ওয়ার্ম আপ ব্যায়াম হবে ধীর গতির ও সহজ ব্যায়াম এবং ব্যায়ামের ক্ষেত্রে আপনার তীব্রতাও কম হবে।

. ওয়ার্ম আপ ব্যায়াম এর তীব্রতা কত হবে তা নির্ভর করে একজন ব্যক্তির শারীরিক ফিটনেস ও কোন ধরনের ব্যায়াম করা হবে,তার উপর।

. অনেক ধরনের ওয়ার্ম আপ ব্যায়াম আছে। যেমন: ধীরে ধীরে হাঁটা, ডাইনামিক স্ট্রেচিং, ধীরে সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, সহজ এরোবিকস করা, জগিং করা ইত্যাদি।

. ওয়ার্ম আপের জন্যে ৫ মিনিট যে কোনো প্রকার ব্যায়াম করা উচিত (ধীরে হাঁটা, জগিং করা ইত্যাদি)। তারপর ৫ মিনিট স্ট্যাটিক স্ট্রেচিং করতে পারেন মাসেলগুলোকে সচল করার জন্যে।

. আসলে কমপক্ষে ১০ মিনিট ওয়ার্ম আপ করা ভালো। কারণ প্রথম ১০ মিনিটের পরে আপনার মাসেলগুলোতে ব্যায়াম কাজ করা শুরু করবে। আপনার শরীরের তাপমাত্রা বাড়বে। ক্যালরিও বার্ন করা শুরু করবে।

. ওয়ার্ম আপ করার পর যদি দেখেন আপনি হালকা ঘামছেন, তার মানে আপনি এখন ব্যায়াম করার জন্য প্রস্তুত।  কিন্তু ওয়ার্ম আপ কারার ফলে যদি আপনি ক্লান্ত অনুভব করে, তবে বুঝতে হবে ওয়ার্ম আপ সঠিকভাবে হয়নি।

ওয়ার্ম আপ ব্যায়ামের উদাহরণ :

. একটি সহজ ওয়ার্ম আপের উপায় হচ্ছে প্রথম ৩-৪ মিনিট ধীরে অথবা মাঝারি গতিতে হাঁটা, এরপর কয়েক মিনিট দ্রুত হাঁটা, তারপর ৫-৬ মিনিট ধীরে ধীরে জগিং করা।

. এরোবিকস ব্যায়ামের জন্যে প্রথমে মার্চ করে, সুরের ছন্দে শরীরকে নাড়িয়ে ওয়ার্ম আপ করতে হবে, তারপর কিছু ডায়নামিক স্ট্রেচিং করা যেতে পারে। অথবা ধীরে ধীরে কিছু এরোবিকস ব্যায়াম করা যেতে পারে।

. সাঁতার কাটার ক্ষেত্রেও শুরুতে ধীরে ধীরে সাঁতার কেটে ওয়ার্ম আপ করার পর যার যার ফিটনেস অনুযায়ী দ্রুত গতিতে সাঁতার কাটতে হবে।

. একইভাবে শারীরিক পরিশ্রম না করেও ওয়ার্ম আপ করা যায় যেমন: অতিরিক্ত কাপড় পরে, সোওনা(sauna)নিয়ে, গরম পানিতে গোসল করে, শরীর ম্যাসাজ করে ইত্যাদি। 

 

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন!
অনুগ্রহ করে এখানে আপনার নাম লিখুন